নির্বাচন কমিশনের বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর কাজে পিছিয়ে রয়েছে ‘নেতা’দের কলকাতা। সোমবার দলের ভার্চূয়াল বৈঠক করে এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ডহারবার সাংসদের রোষানলে পড়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে বালিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের গায়ক মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়-সহ কলকাতার সব বিধায়ক। কড়া ধমকের সঙ্গে দাওয়াই হিসাবে মঙ্গলবার কলকাতার দুই জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে কারণ জানার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক। নির্দেশ মতো কলকাতার দুই প্রান্তে দু’টি পৃথক বৈঠকে শামিল হলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী থেকে শুরু করে মেয়র ফিরহাদ, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ কলকাতার শীর্ষনেতারা।
দক্ষিণ কলকাতার তেরাপন্থ ভবনে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রতের নেতৃত্বে বৈঠকে হাজির নিচুতলার নেতারা। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বেশিরভাগ নেতাই দলকে জানিয়েছেন, এসআইআর সংক্রান্ত কাজ তাঁরা ৬০-৭০ শতাংশ অফলাইনে সেরে ফেলেছেন। কিন্তু তা দিদির দূত অ্যাপে আপলোড করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ কাউন্সিলর বৈঠকে জানান, দিদির দূত অ্যাপ নিয়ে বিএলএ-২-দের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যেমন কোনও কোনও ক্ষেত্রে লগ ইন করা যাচ্ছে না। তেমনই আবার কোনও এলাকায় ইন্টারনেটের সমস্যা থাকলে অ্যাপটি কাজ করছে না।
মঙ্গলবার তেরাপন্থ ভবনে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে এসআইআর নিয়ে বৈঠক করলেন শীর্ষ নেতারা। ছবি: সংগৃহীত।
কাউন্সিলরদের তরফে নেতাদের জানানো হয়েছে, দিদির দূত অ্যাপে ভোটার তালিকা নিয়েও সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে ভোটার তালিকা সংশোধন করা যাবে না, কারণ তা নির্বাচন কমিশন বন্ধ করে রেখেছে। আবার দিদির দূত অ্যাপে যে ভোটার তালিকা রয়েছে, তা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির। তারপরেও দুবার পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। যে কারণে তারা দিদির দূত অ্যাপের ভোটার তালিকা নিয়েও হিমসিম খাচ্ছেন। কারণ, ভোটার তালিকায় ভোটারদের ক্রমিক নম্বর বদলে যাওয়ায় সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে।
বৈঠকে হাজির আইপ্যাকের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দিদির দূত অ্যাপে এই ধরনের সমস্যার কথা তারা শুনেছেন। দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান করা হবে। সোমবারের বৈঠকে অভিষেক স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, কলকাতার কাউন্সিলর-বিধায়কদের বিএলএ-২দের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে। তাঁদের কাজকর্মের সুবিধা অসুবিধা থেকে খাওয়াদাওয়া পর্যন্ত খোঁজখবর নিতে হবে নিয়মিত। দক্ষিণ কলকাতার বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ নাম না করে কিছু কাউন্সিলরের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে বিএলএ-২দের সবরকম খেয়াল রাখার কথা বলেছেন।
উত্তর কলকাতার মোহিত মঞ্চে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের বৈঠকেও একই ধরনের সমস্যার কথা তুলে ধরেন নেতারা। সেখানেও সমস্যার কথা শুনে আইপ্যাকের প্রতিনিধিরা যাবতীয় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে দু’টি বৈঠকেই নেতারা ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে অভিষেকের নির্দেশ মতো ১০০ শতাংশ এনুমারেশন ফর্ম বিএলও-দের কাছে জমা দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। যে হেতু কলকাতার দু’টি জেলার ক্ষেত্রেই মেয়রকে দায়িত্ব দিয়েছেন অভিষেক। তাই কাউন্সিলরদের এই কাজে কোনও সমস্যা হলে, তা দেখবেন তিনিই।