Advertisement
E-Paper

ভুল ঢাকতে কেন মরিয়া, প্রশ্ন পুলিশের অন্দরে

হরিদেবপুর-কাণ্ডে স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা এক সদ্য স্বামীহারা মহিলাকে যে ভাবে উত্ত্যক্ত করেছেন, তা ধামাচাপা দিতে মরিয়া কলকাতা পুলিশ। পুলিশের একের পর এক ফেসবুক প্রতিবেদন যেন সে কথাই আরও স্পষ্ট করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৮
হাসিরানি সান্যাল

হাসিরানি সান্যাল

হরিদেবপুর-কাণ্ডে স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা এক সদ্য স্বামীহারা মহিলাকে যে ভাবে উত্ত্যক্ত করেছেন, তা ধামাচাপা দিতে মরিয়া কলকাতা পুলিশ। পুলিশের একের পর এক ফেসবুক প্রতিবেদন যেন সে কথাই আরও স্পষ্ট করছে। কেন এই মরিয়া চেষ্টা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশের অন্দরেই।

কলকাতা পুলিশেরই একটি অংশ মনে করছে, ওই রাতে যে ও ভাবে ক্লাবের ছেলেদের ওই বৃদ্ধার ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেওয়া ঠিক হয়নি, সেটা বুঝতে পেরেছেন লালবাজার-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যেহেতু পুলিশই মহিলার সুরক্ষায় ওই ছেলেদের ঘরের ভিতরে যেতে বলেছিল, তাই এখন তাঁদের কোনও ভাবেই অভিযুক্ত করতে নারাজ লালবাজার।

বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা পুলিশের তরফে যে প্রতিবেদন লেখা হয় ফেসবুকে, তাতে কয়েক জন মহিলার ছবি দেখিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা লিখেছিলাম, স্থানীয় মহিলারা ছিলেন। আজও লিখছি, মহিলারা ছিলেন এবং বৈদ্যুতিন মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে কথাও বলেছিলেন। কয়েকটি ছবি দিলাম। যা সত্যিটা স্পষ্ট করে দেবে।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের ওই প্রতিবেদনে যে ছবিগুলি সংযোজিত করা হয়েছে, সেগুলির কোনওটাই ওই বৃদ্ধার ফ্ল্যাটের ভিতরে তোলা নয়। স্থানীয় ওই মহিলারা বাড়ির বাইরে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে চলে যাওয়ার পরে বৃদ্ধার ফ্যাটে ওই যুবকেরা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।

কলকাতা পুলিশের হাতে ঘরের ভিতরে কোনও মহিলার ছবি থাকলে সেটা পোস্ট করা হল না কেন, পুলিশের নিচু তলার কর্মীদের মধ্যেই উঠেছে সেই প্রশ্ন। কলকাতা পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করতে ফ্ল্যাটের ভিতরে বৃদ্ধার সঙ্গে ওই মহিলাদের ছবি দেওয়া জরুরি ছিল বলেও মনে করছেন কলকাতা পুলিশের কিছু কর্মী।

ফ্ল্যাটের মধ্যে কী ঘটেছে, তার পরিষ্কার ছবি রয়েছে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের তোলা ফুটেজে। কী ভাবে ওই যুবকেরা বৃদ্ধাকে উত্ত্যক্ত করছেন এবং ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যেতে বলছেন, তা-ও ধরা পড়েছে ওই ফুটেজে।

হরিদেবপুর-কাণ্ড নিয়ে পুলিশ ফেসবুকে মঙ্গলবার রাতে যে পোস্টটি করেছিল, সেটি আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকের উদ্দেশে প্রতিবাদপত্র হিসেবে লেখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সই সম্বলিত একটি চিঠি হরিদেবপুর থানায় জমা নিয়েছে পুলিশ। সেটিও আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে লেখা। কিন্তু আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠি পুলিশ কী ভাবে হরিদেবপুর থানার সিলমোহর দিয়ে গ্রহণ করে, সেটাই মাথায় ঢুকছে বহু প্রবীণ পুলিশ অফিসারের।

যদিও আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকের উদ্দেশ্যে লেখা কোনও প্রতিবাদপত্র শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পত্রিকার দফতরে এসে পৌঁছয়নি। লালবাজারও সরকারি ভাবে কোনও প্রতিবাদপত্র পত্রিকার দফতরে পাঠায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক প্রবীণ অফিসারের মন্তব্য, ‘‘লালবাজার ওই যুবকদের অপরাধ ঢাকতে গিয়ে নিজেদেরই হাস্যকর করে তুলছে।’’

Harassment Elderly Lady Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy