Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Pollution

বাধা কাটিয়ে সফল হবে কি সবুজায়ন, বৃক্ষরোপণ ঘিরে নানা প্রশ্ন, সংশয় মহানগরে

গাছ লাগানোর পরিসর খুঁজে পাওয়াই কঠিন। ফুটপাতে গাছ বসানোর পরিকল্পনা করা হলেও অনেক জায়গাতেই তা চওড়া নয়।

গাছ লাগিয়েই বাতাস বিষমুক্ত করতে হবে।

গাছ লাগিয়েই বাতাস বিষমুক্ত করতে হবে। প্রতীকী ছবি

অনির্বাণ দাশগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ০৮:৪৫
Share: Save:

কলকাতায় বায়ুদূষণের মাত্রা যে উদ্বেগজনক, তা আর অজানা তথ্য নয়। মহানগরের বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম কণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার) মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় অনেকটাই বেশি। বায়ুদূষণের মোকাবিলায় চাই সবুজায়ন। কিন্তু গাছ লাগানোর পরিসর খুঁজে পাওয়াই কঠিন। ফুটপাতে গাছ বসানোর পরিকল্পনা করা হলেও অনেক জায়গাতেই তা চওড়া নয়। কোথাও আবার বেদখল হয়ে গিয়েছে ফুটপাত।

কলকাতা পুরসভার বক্তব্য, গাছ লাগিয়েই বাতাস বিষমুক্ত করতে হবে। তাই ‘ক্লিন এয়ার মিশন’ প্রকল্পে শহর জুড়ে প্রচুর গাছ লাগানো শুরু হয়েছে। তবে পুর উদ্যান বিভাগের আধিকারিকদের একাংশের মতে, এই উদ্যোগের সাফল্য নির্ভর করছে কতগুলি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে। কোথায়, কী ধরনের গাছ লাগানো হচ্ছে এবং সেগুলির পরিচর্যা কতটা হচ্ছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

পুরসভার গাছ লাগানোর জায়গা বলতে ফুটপাত, পার্ক ও খোলা জায়গা। সেই সব জায়গাতেই গাছ লাগানো শুরু হয়েছে। উদ্যান বিভাগ সূত্রের খবর, ‘ক্লিন এয়ার মিশন’-এ এ বার মূলত বড় গাছ লাগানো হচ্ছে। পাঁচ-সাত ফুট ব্যবধানে মেহগনি, শিশু, জারুল, নারকেল, সোনাঝুরি, আম, চালতা, জামরুলের মতো ২৪ থেকে ২৫ রকমের গাছ লাগানো হচ্ছে। উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের কথায়, ‘‘বাতাসে কার্বনের পরিমাণ কমাতেই এই উদ্যোগ। ফুটপাতে যতটা সম্ভব গাছ লাগানো হচ্ছে। সেগুলিকে যাতে বড় করে তোলা যায়, সে দিকেও পুরসভা নজর রাখবে।’’ তাঁর দাবি, ‘ক্লিন এয়ার মিশন’ প্রকল্পে চলতি বছরেই প্রায় এক লক্ষ গাছ লাগাবে পুরসভা।

যে কোনও মেট্রোপলিটন শহরেই ৩০ শতাংশ সবুজায়ন দরকার। বর্তমানে কলকাতায় সবুজের ভাগ তার থেকে অনেকটাই কম। উদ্যান বিভাগের আধিকারিকদের একাংশের মতে, ‘ক্লিন এয়ার মিশন’-এ সবুজায়নের পরিমাণ অনেকটাই বাড়ানো সম্ভব হবে। কিন্তু ৩০ শতাংশে পৌঁছনো সম্ভব নয়। তাঁদের যুক্তি, সবুজায়নের এলাকার একটি বড় অংশই ছিল ই এম বাইপাস লাগোয়া পূর্ব কলকাতায়। ওই এলাকায় গত কয়েক বছরে দ্রুত নগরায়ণ ঘটেছে। বসতবাড়িগুলিতে প্রচুর গাছ ছিল। সেই বাড়িগুলি একে একে বিক্রি হয়ে গিয়ে মাথা তুলেছে সুউচ্চ বহুতল। কাটা পড়েছে গাছগুলি। তাঁদের মতে, ওই এলাকায় যে পরিমাণ গাছ কাটা হয়েছে, তা পূরণ করা কার্যত অসম্ভব।

এই দফায় সবুজায়নের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথাও বলছেন আধিকারিকেরা। তাঁদের একাংশের মতে, গাছ লাগাতে গেলে চওড়া ফুটপাত দরকার। এমন চওড়া ফুটপাত ৫০-৬০টি জায়গায় রয়েছে। আবার অনেক জায়গায় ফুটপাত চওড়া হলেও দখলদারির সমস্যা রয়েছে। সেই সব জায়গায় যে গাছ লাগানো সম্ভব নয়, তা প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন মেয়র পারিষদও (উদ্যান)। ফলে পার্ক ও খোলা জায়গার উপরেই বেশি ভরসা করতে হচ্ছে পুরসভাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Greenary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE