Advertisement
E-Paper

ছেলেদের টপকে গোলের রানি সুরজমণি

মেয়েরাও খাটো নয়! সমান সমান! এই বার্তা পৌঁছে দিতেই ছেলেদের ও মেয়েদের এক দলে নিয়ে ফুটবলের আসর বসিয়েছিলেন ছক-ভাঙা ভাবনার কয়েক জন উদ্যোক্তা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:০৯
সেরা: সুরজমণির (ডান দিকে) হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন টেনিস খেলোয়াড় শিবিকা বর্মণ। নিজস্ব চিত্র

সেরা: সুরজমণির (ডান দিকে) হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন টেনিস খেলোয়াড় শিবিকা বর্মণ। নিজস্ব চিত্র

মেয়েরাও খাটো নয়! সমান সমান! এই বার্তা পৌঁছে দিতেই ছেলেদের ও মেয়েদের এক দলে নিয়ে ফুটবলের আসর বসিয়েছিলেন ছক-ভাঙা ভাবনার কয়েক জন উদ্যোক্তা।

মিন্টো পার্কের কাছে একটি ক্লাবের টেনিস কোর্টের পাশে সেই আসর সত্যিই ছেলে বা মেয়েদের দক্ষতা নিয়ে গতে-বাঁধা সব ভাবনা ওলটপালট করে দিল। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, মেয়েরা মাঠে নামলেও ছেলেদের সঙ্গে ম্যাচে একটা গোলও করতে পারবে না। রবিবার প্রতিযোগিতার শেষে দেখা গেল, সব থেকে বেশি গোল করেছে চার ফুট ন’ইঞ্চি উচ্চতার ছোটখাটো এক কিশোরী। ঠাকুরপুকুরের ‘পরিবার’ দলের স্ট্রাইকার সুরজমণি টুডু আদতে ঝাড়গ্রামের কুটুচুহা গ্রামের কন্যা। গরিব চাষির ঘরের মেয়ে সাত বছর ধরে কলকাতায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তত্ত্বাবধানে থেকে পড়াশোনা, ফুটবল, নাচে মেতে আছে। বছর ষোলোর মেয়েটি নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরীক্ষায় ভাল ফল করায় তাকে সম্প্রতি বেহালার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে।

কয়েক মাস আগে মেয়েদের একটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময়েও সব থেকে বেশি গোল সুরজমণিই করেছিল। এ বার খেলার শেষে তবু সে বলছিল, ‘‘ছেলেদের সঙ্গে কতটা পারব, তা ভেবে চিন্তা হচ্ছিল। কিন্তু মাঠে নামতেই সব ভয় উধাও!’’ সব মিলিয়ে ১৪টি গোল করেছে সুরজমণি। এর মধ্যে অশোক হল স্কুলের বিরুদ্ধেই এক সঙ্গে চারটি। তবে সেমিফাইনালে ‘পরিবার’ হেরে গিয়েছে টাইব্রেকারে। দলের কর্মকর্তা রাজু রাম বলছিলেন, ‘‘ছোট্টখাট্টো চেহারার মেয়েটি অসম্ভব ভাল ‘ফিনিশার’! ছেলেদের সঙ্গে ম্যাচেও ওর দক্ষতায় আমাদের ভরসা ছিল।’’ ৪৮টি দলের প্রতিযোগিতায় জয়ী অবশ্য দক্ষিণ কলকাতার ‘ক্যালকাটা সোশ্যাল প্রজেক্টস’। তবে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার মূল্য থেকে ১০ হাজার টাকা রামপুরহাটের সাঁওতাল অধ্যুষিত এলাকার একটি দলকে দিয়েছে জয়ী দলটি। নানা প্রতিকূলতায় ভাল ভাবে অনুশীলন করতে না পেরেও রামপুরহাটের দলটি গ্রুপ পর্যায় থেকে নক-আউটে উঠেছিল। উদ্যোক্তারা বলছিলেন, মণিপুরের তিনটি দলের অনেকে কলকাতায় আসার পথে ডিমাপুরে প্রথমবার ট্রেন চোখে দেখল। কলকাতায় খেলার পাশাপাশি ইকো পার্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে বেড়ানোও প্রাণ ভরে উপভোগ করেছে তারা।

এই আসরের অন্যতম উদ্যোক্তা রিচা দাগার কথায়, ‘‘খেলা নিয়ে অসম্ভব সিরিয়াস এই ছোটরা। ম্যাচের আগে চিপ্‌স বা ভাজাভুজি কেউ ছোঁবেও না!’’ বিহার, অসমের দলগুলিও ভাল খেলেছে। মেয়েরা করুণার পাত্রী নয়, দরকার শুধু সমান সুযোগটাই — প্রতিযোগিতা থেকে শিখলেন আয়োজকেরাও।

Football Woman Empowerment Footballer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy