Advertisement
E-Paper

অভাব-অভিযোগ বলার সুযোগ হল না, গরহাজির আইপিএস-রা

‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি’র উদ্যোগে এই প্রথম বার রাজ্যের মহিলা পুলিশকর্মীদের নিয়ে সভার আয়োজন করা হয়েছিল রবীন্দ্র সদনে। শনিবারের সেই সভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের সব জেলার মহিলা পুলিশকর্মীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:১১
সমবেত: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি আয়োজিত সভায় রাজ্যের মহিলা পুলিশকর্মীরা। শনিবার, রবীন্দ্র সদনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

সমবেত: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি আয়োজিত সভায় রাজ্যের মহিলা পুলিশকর্মীরা। শনিবার, রবীন্দ্র সদনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

অভাব-অভিযোগ জানাতে কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন আগের দিন সকালে, কেউ রাতের ডিউটি সেরে কলকাতার গাড়ি ধরেছিলেন ভোরে। দিনভর বসে মন্ত্রী-কর্তাদের বক্তব্য শুনলেও ডিউটি করতে গিয়ে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তা বলার সুযোগ পেলেন না কেউই। বেশ কয়েকটি আশ্বাস শুনে আর মধ্যাহ্নভোজ সেরে ফেরার গাড়ি ধরতে হল তাঁদের। মহিলা পুলিশকর্মীদের অনেকেই বললেন, ‘‘সমস্যার কথা যা বলতে এসেছিলাম, বলতে দেওয়া হল কোথায়? আমন্ত্রিতের তালিকায় থাকা চার জন আইপিএস অফিসারের এক জনও আসেননি।’’

‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি’র উদ্যোগে এই প্রথম বার রাজ্যের মহিলা পুলিশকর্মীদের নিয়ে সভার আয়োজন করা হয়েছিল রবীন্দ্র সদনে। শনিবারের সেই সভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের সব জেলার মহিলা পুলিশকর্মীদের। বাহিনীর মহিলা পুলিশকর্মীদের মধ্যে কয়েক বছর ধরেই নানা বিষয়ে ক্ষোভ জমা হচ্ছিল। কাজ করার ন্যূনতম পরিকাঠামো তাঁরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছিল। এর মধ্যেই রাজ্যে নতুন করে ২০টি মহিলা থানা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তারই প্রেক্ষিতে অভাব-অভিযোগ শুনে ক্ষোভ প্রশমন করতেই এমন সভার সিদ্ধান্ত বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

এ দিনের সভায় ছিলেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ তথা কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায় এবং দুই মন্ত্রী, বিরবাহা হাঁসদা ও শিউলি সাহা। সভায় রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক মনোজ মালব্য, স্বাতী ভাঙ্গালিয়া, ঈশানী পাল-সহ মোট চার জন আইপিএসের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু কেউ আসেননি।

আলোচনায় উঠে আসে মহিলা পুলিশকর্মীদের সমস্যার প্রসঙ্গ। জানানো হয়, বহু জেলায় রাতে মহিলা পুলিশকর্মীদের ডিউটি দেওয়া যায় না পরিকাঠামোর অভাবে। অনেক থানায় নেই মহিলা ব্যারাক। পুলিশ আবাসনে ঘরও তাঁরা পাননি। ডিউটি করার সময়ে প্রয়োজনে তাঁদের পোশাক বদলের জায়গা থাকে না। আলোচনায় উঠে আসে, ডিউটি করতে গেলে সঙ্গে বায়ো টয়লেটের গাড়ি না যাওয়ার প্রসঙ্গ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে ডিউটি করে মহিলা পুলিশকর্মীদের শৌচাগার খুঁজে বেড়াতে হয় বলেও শোনা গেল।

পুলিশের ওয়েলফেয়ার কমিটির আহ্বায়ক বিজিতাশ্ব রাউত বলেন, ‘‘৭১টি পুলিশ ইউনিট থেকে মহিলা কর্মীরা এসেছেন। তাঁরা ২৫ টাকা করে চাঁদা দিয়েছেন বলে এই সভা হচ্ছে। যেখানে ১৯৯০ সালে রাজ্যে ২০১১ জন মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন, এখন সেই সংখ্যা ৯৯৯৪ হয়েছে। সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করা হবে। আলোচনায় উঠে আসা সমস্যাগুলি যথাযথ জায়গায় বলা হবে। মহিলা পুলিশকর্মীরা যাতে হোম ডিস্ট্রিক্টে চাকরি করতে পারেন, সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’

কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সমন্বয়কারী শান্তনু সিংহ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওয়েলফেয়ার কমিটি কোনও শ্রমিক ইউনিয়ন নয়। এটা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই তৈরি হয়েছে। বহু জায়গাতেই মোবাইল টয়লেট চালু করা হয়েছে। পরিকাঠামোর কিছু সমস্যা আছে। সেটাও দ্রুত মিটিয়ে ফেলা হবে।’’ বিরবাহা বলেন, ‘‘সমস্যা মেটানো তো হবেই, পুলিশকর্মীদেরও ডিউটির সময়ে মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে মন দিয়ে কাজ করতে হবে।’’ আলোচনার মধ্যেই শিউলি তোলেন মহার্ঘ ভাতা প্রসঙ্গ। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও এ নিয়ে সরকার ভাবছে বলে তিনি মন্তব্য করায় হাততালির ঝড় ওঠে। ফিরহাদ বলেন, ‘‘নারীর অধিকার এই রাজ্যে সব চেয়ে বেশি। মহিলা পুলিশকর্মীদের অধিকারও দ্রুত নিশ্চিত করা হবে।’’

police Meeting Women
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy