Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সাগর দত্তে রোগীকে ‘ভুল’ গ্রুপের রক্ত

পাপিয়াদেবীর কথায়, ‘‘প্রথম দিন ‘ও’ পজিটিভ রক্তই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরের দিন ওই ব্লাড ব্যাঙ্কেই স্বামীর রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজিটিভ লেখা হয়। দু’ দিন দু’ ধরনের গ্রুপ দেখে আমার সন্দেহ হয়।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০০:৩৮
Share: Save:

রোগীকে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার অভিযোগ উঠল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

মলের সঙ্গে রক্ত বার হওয়ায় সোদপুরের বাসিন্দা মানিক ভদ্রকে গত ১৩ মে ওই হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করে তাঁর পরিবার। মানিকবাবুর স্ত্রী পাপিয়াদেবী জানান, তাঁর স্বামীর হাত-পা ফুলে যাওয়ায় রক্তের প্রয়োজন ছিল। স্বামীর রক্তের নমুনা নিয়ে তিনি হাসপাতালেরই ব্লাড ব্যাঙ্কে যান। সেখানে তাঁকে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ‘ও’ পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়।

পাপিয়াদেবীর কথায়, ‘‘প্রথম দিন ‘ও’ পজিটিভ রক্তই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরের দিন ওই ব্লাড ব্যাঙ্কেই স্বামীর রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজিটিভ লেখা হয়। দু’ দিন দু’ ধরনের গ্রুপ দেখে আমার সন্দেহ হয়। দ্বিতীয় দিন দু’ বার রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে জানতে পারি স্বামীর রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজিটিভ। তাঁকে যে প্রথম দিনে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়েছে সেটা তখন নিশ্চিত হই। তবে চিকিৎসকেরা জানান ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় কোনও সমস্যা হবে না।’’

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার পলাশ দাস অবশ্য দাবি করেছেন বিষয়টি ভুল নয়। তিনি বলেন, ‘‘রোগীর রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ তা প্রথম দিন আমাকে জানানো হয়েছিল। ওই দিন ব্লাড ব্যাঙ্কে ওই গ্রুপের রক্ত ছিল না। তাই হেমাটোলজির পরামর্শ মেনে ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়েছে। এর জন্য রোগীর কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’

কিন্তু সঠিক গ্রুপ যদি প্রথম দিনেই জানা গিয়েছিল তবে কেন ১৩ মে মানিকবাবুর রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ‘ও পজিটিভ’ লেখা হল? ‘বি’ পজিটিভ রক্তের অভাব থাকায় মানিকবাবুকে ‘ও পজিটিভ’ রক্ত দেওয়ার বিষয়টি কেন তাঁর পরিজনদের জানানো হয়নি? স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, ঘটনার দিনে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে ‘বি’ গ্রুপের রক্ত ছিল। পাপিয়াদেবীর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে?’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পলাশবাবু বলেন, ‘‘প্রশ্নগুলো অযৌক্তিক নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কিছু বলতে পারব।’’

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মেডিক্যাল গাইডলাইন অনুযায়ী, রোগী সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকলে এবং তাঁর গ্রুপের রক্ত না পেলে এ ক্ষেত্রে ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্ত দেওয়া যেতে পারে। তাতে কিছু সমস্যা হলেও রোগীকে বাঁচাতে ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্ত দিতে বাধা নেই।’’

মানিকবাবুর অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল না বলেই দাবি তাঁর পরিজনেদের। স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রোগীর গ্রুপের রক্ত কোথায় পাওয়া যাবে তা তো রক্তের অ্যাপ ‘জীবন শক্তি’ থেকেই জানা যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE