দলের সতীর্থের কাছ থেকে ঘটনা শুনেই আঁতকে উঠেছিলেন কলকাতা পুরসভার ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহম্মদ আনোয়ার। তাঁর নাম করে বন্দর এলাকার এক যুবক দেড় লক্ষ টাকা নিয়েছেন। আনোয়ার নাকি নিজে ফোন করে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে ওই টাকা চেয়েছিলেন!
এই ঘটনা বাজারে চাউর হলে কী হতে পারে, তা আঁচ করে আর দেরি করেননি আনোয়ার। প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিকে সরাসরি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পশ্চিম বন্দর থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, রাজাবাগানের বাসিন্দা আব্দুল জব্বর নামে ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে সইফুদ্দিন নামে এক যুবকের নাম রয়েছে। তাকে অবশ্য ধরা যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনায় মহম্মদ আনোয়ারের কোনও যোগ মেলেনি।
পুলিশ জানায়, আব্দুল পেশায় দর্জি। রাজাবাগানের একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করেন তিনি। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় সইফুদ্দিনের। সে ওই কারখানায় প্যাকিংয়ের কাজ করত। আব্দুল ছেলের জন্য চাকরি খুঁজছিলেন জানতে পেরে সইফুদ্দিন জানায়, তার সঙ্গে ৮০ নম্বর ওর্য়াডের কাউন্সিলর মহম্মদ আনোয়ারের যোগাযোগ আছে। টাকা দিলে আব্দুলের ছেলের বেসরকারি সংস্থায় চাকরির বন্দোবস্ত করে দেবেন কাউন্সিলর। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিশ্বাস অর্জনের জন্য সইফুদ্দিন ফোনে ‘কাউন্সিলরের’ সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিয়েছিলেন। যদিও ফোনের ও পারে কাউন্সিলরের বদলে সইফুদ্দিন কোনও শাগরেদ ছিল বলেই মনে করছে পুলিশ।
আব্দুল পুলিশকে জানিয়েছেন, ফোনে ‘কাউন্সিলরের’ কাছ থেকে চাকরির আশ্বাস পেয়েই ডিসেম্বরে দফায় দফায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা সইফুদ্দিনকে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু টাকা মেলার পরেই গা ঢাকা দেয় সইফুদ্দিন। তাঁর ফোনও বন্ধ হয়ে যায়। এর পরেই গত মঙ্গলবার আব্দুল স্থানীয় ১৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফতাবউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আফতাবউদ্দিন শনিবার বলেন, ‘‘দলের এক কাউন্সিলরের নাম প্রতারণায় জড়িয়ে যাচ্ছে দেখে আমি আনোয়ারকে ফোন করে ঘটনা জানাই।’’ আনোয়ারের দাবি, ‘‘আমার নাম ব্যবহার করে লোক ঠকিয়েছে ওই প্রতারক। আমি এমন কাউকে চিনি না। ঘটনা জেনেই পুলিশে অভিযোগ জানাতে বলেছি।’’
পুলিশের সন্দেহ, সইফুদ্দিন ছাড়াও এই প্রতারণা চক্রে আরও অনেকে রয়েছে। চক্রটি বন্দর এলাকায় সক্রিয় হয়েছে। শুধু আব্দুল নন, আরও অনেকেই এ ভাবে প্রতারিত হয়েছেন। তাঁদের সকলের কাছেই পুলিশ জেনেছে, সরকারি চাকরি নয়, সইফুদ্দিন ভিন্রাজ্যে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলতো। এ জন্য ৭৫ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা মতো নিত। জানা গিয়েছে, প্রত্যেক বারই জনবহুল এলাকায় নগদে টাকা নিয়েছে সইফুদ্দিন। পুলিশের অনুমান, ভিন্ রাজ্যেও ছড়িয়ে রয়েছে এই চক্র। সইফুদ্দিনকে ধরলে চক্রের হদিস মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy