ঝুলন্ত অবস্থায় অন্ধ্রপ্রদেশের এক যুবকের পচাগলা দেহ মিলল দক্ষিণ শহরতলির আজাদগড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে।
পুলিশ জানায়, ফানেদ্রো সামেনেনি ভেঙ্কটেশ ওয়ারলু (২৩) নামে ওই যুবক শহরের একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে খেলতেন। মাস দেড়েক ধরে কেয়ারটেকার হিসেবে আজাদগড়ের একটি বাড়িতে থাকছিলেন তিনি।
এ দিন ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকায় পড়শিরা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দেখে, বৈঠকখানার সিলিং থেকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ঝুলছেন ফানেন্দ্রো। পাশে একটি মই রাখা। পুলিশের অনুমান, অন্তত দিন চারেক আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের অনুমান, এটি আত্মহত্যা।
ঘর থেকে ফানেদ্রোর মোবাইলটি পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, ঘটনার আগে মোবাইলে কারও সঙ্গে কথা বলেছিলেন ওই যুবক। ফোনের ‘কল লিস্ট’ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানায় পুলিশ।
যে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ফানেদ্রো খেলতেন, সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানান, মাস পাঁচেক আগে অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন ওই যুবক। সপ্তাহখানেক আগেও তিনি খেলতে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছিলেন বলেও কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন তিনি। তদন্তকারীদের বক্তব্য, সম্ভবত কোনও নামী ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ না পাওয়ার হতাশা ছিল তাঁর।
রিজেন্ট পার্ক পোস্ট অফিস লাগোয়া ওই তল্লাটের বাসিন্দারা জানান, ওই বাড়ির আশপাশ থেকে দিন তিনেক ধরে পচা গন্ধ ছড়াচ্ছিল। বুধবার রাতে তা আরও প্রকট হয়। বাড়ির দোতলার বাসিন্দারা ও জনাকয়েক পড়শি আঁচ করেন, দরজা-জানলা বন্ধ একতলার ঘরই
গন্ধের উৎস।
তাঁরা জানান, ফানেদ্রো এলাকায় কারও সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না। পাড়ায় খুব কমই দেখা যেত তাঁকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িটির মালিক তাপস মুখোপাধ্যায় দোতলায় থাকেন। বছর কয়েক আগে তিনি স্বাতী শর্মা নামে পেশায় আইনজীবী এক মহিলাকে বাড়িটির একতলা বিক্রি করে দেন। তাঁরা সেখানে কিছু কাল থাকার পরে ভাড়াটে বসিয়ে অন্যত্র চলে যান। পরে ভাড়াটেরা উঠে যাওয়ায় বাড়ির একতলা ফাঁকা হয়ে যায়। তাই ওই জায়গায় কাউকে রাখার জন্য লোক খুঁজছিলেন স্বাতীদেবী।
তদন্তকারীরা জানান, তাঁরা স্বাতীদেবীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, স্বাতীদেবী জানিয়েছেন তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখানকারই এক শিক্ষকের মাধ্যমে ফানেদ্রোর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। তার পরেই ঠিক হয়, ফানেদ্রো আজাদগড়ের বাড়ির একতলায় থাকবেন।
এ দিনের ঘটনার পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, অন্ধ্রপ্রদেশের যে এলাকায় ফানেদ্রোর বাড়ি, সেখানকার পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়েছে। ওই যুবকের পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে।