তখন বিকেল পাঁচটা। ব্যস্ত মেফেয়ার রোড। চলন্ত অটোর পিছনে ‘‘চোর চোর’’ বলে দৌড়চ্ছেন ছেঁড়া জামা-প্যান্ট পরা এক ব্যক্তি। কিন্তু কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই দ্রুতগতিতে উধাও হয়ে গেল অটোটি।
অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকেলে পেশায় পাইকারি সিগারেট-বিক্রেতা ওই ব্যক্তির থেকে ৭০ হাজার টাকা ছিনতাই করে অটোয় চেপে পালায় পাঁচ দুষ্কৃতী। কিছুক্ষণ পরে এক জন ধরা পড়ে। তাকে জেরা করে ধরা হয় আরও দু’জনকে। বাকি দু’জনের খোঁজ চলছে। তবে প্রথম দুষ্কৃতী কী ভাবে গ্রেফতার হল, তা নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের কাছ থেকে দু’রকমের বক্তব্য মিলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পার্ক সার্কাস চার নম্বর ব্রিজের কাছে অটোটিকে আটকান স্থানীয়েরাই। চার জন পালায়, এক জন ধরা পড়ে যায়। ওই ছিনতাইকারীকে চিহ্নিত করেন সিগারেট-বিক্রেতা। অভিযুক্তকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা।
যদিও পুলিশের দাবি, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ খোঁজ শুরু করে। গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, পালাতে গিয়ে এক দুষ্কৃতীর পায়ে চোট লেগেছে। তারা ন্যাশনাল মেডিক্যালে গিয়েছে। পুলিশের দাবি, হাসপাতালে গিয়েই এক দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশ। তাকে জেরা করে আরও দু’জনকে ধরা হয়।
ওই সিগারেট বিক্রেতার নাম মদন ভট্টাচার্য। আদতে নবদ্বীপের বাসিন্দা মদনবাবু ফার্ন রোডের একটি সংস্থার কাছ থেকে সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে পার্ক স্ট্রিট, বালিগঞ্জে বিক্রি করেন। বুধবার তিনি জানান, মঙ্গলবার মেফেয়ার রোডে সাইকেলে যাওয়ার সময়ে আচমকা একটি অটো তাঁর পথ আটকায়। সাইকেল থেকে তাঁকে নামিয়ে একটি দেওয়ালের গায়ে চেপে ধরে দুষ্কৃতীরা। তিনি চিৎকার করতে গেলে এক জন তাঁর মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। তাঁর প্যান্টের দুই পকেট ছিঁড়ে সব টাকা নিয়ে অটোতে উঠে যায় তিন জন। মদনবাবুর কথায়, “আমার কাছে ৭০ হাজার টাকা ছিল। সবটাই ওরা নিয়ে নেয়। কুড়ি বছর ধরে এ শহরে সাইকেল নিয়ে সিগারেট বিক্রি করছি। এই রকম ঘটনার সম্মুখীন কোনও দিন হইনি।”
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম মহম্মদ শামিম (২৭), শেখ রাজা (২৪) ও মহম্মদ ইরশাদ (৩২)। অটোটি চালাচ্ছিল ইরশাদ। ধৃতদের কাছ থেকে ২৫ হাজার ৩০০ টাকা ও একটি ক্ষুর উদ্ধার হয়েছে। অটোটিও আটক হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতির চেষ্টা এবং মারধর করার মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
ব্যস্ত সময়ে মেফেয়ার রোডের মতো এলাকায় এমন ঘটনা আরও এক বার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে শহরের পথে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে। বুধবার লালবাজারের এক কর্তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য তিনি বলেন, “পুলিশের কাজ পুলিশ ঠিকই করছে। শহরের সর্বত্র আমাদের নজরদারি রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy