Advertisement
E-Paper

কোথায় খুন হন হ্যাপি, খুঁটিয়ে দেখলেন মমতা

বন্দি-মৃত্যুর খোঁজ নিতে গিয়ে জেল-বিভ্রাট ঘটে গিয়েছিল বৃহস্পতিবার। শুক্রবার আর ভুল হয়নি। নবান্নে যাওয়ার আগেই এ দিন প্রেসিডেন্সি জেল পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দণ্ডিত আসামি হরপ্রীত সিংহ ওরফে হ্যাপি সিংহ যেখানে খুন হন, সেই জায়গাটি ভাল ভাবে ঘুরে দেখেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০২:৫৩

বন্দি-মৃত্যুর খোঁজ নিতে গিয়ে জেল-বিভ্রাট ঘটে গিয়েছিল বৃহস্পতিবার। শুক্রবার আর ভুল হয়নি। নবান্নে যাওয়ার আগেই এ দিন প্রেসিডেন্সি জেল পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দণ্ডিত আসামি হরপ্রীত সিংহ ওরফে হ্যাপি সিংহ যেখানে খুন হন, সেই জায়গাটি ভাল ভাবে ঘুরে দেখেন তিনি।

জেলে এত বন্দি-মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে কেন, আলিপুর জেলে গিয়ে বৃহস্পতিবার তা জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের জেলে নয়, সম্প্রতি বন্দিদের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে। তার পরে দু’-একটি প্রশ্ন করে সোজা নবান্নে চলে যান মমতা। প্রেসিডেন্সি জেলে আর যাননি।

শুক্রবার নবান্নে যাওয়ার আগে প্রেসিডেন্সি জেল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। ১৫ মিনিট থেকে বন্দিদের নানা সমস্যার কথা শোনেন। জেল-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, বন্দিদের সঙ্গে আরও বেশি মেলামেশা করে তাঁদের অভাব-অভিযোগের সমাধান করতে হবে। জেলের বিভিন্ন সেলের সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

৫ মে সকালে প্রেসিডেন্সি জেলে সেলের বাইরে যোগাসন করার সময়েই খুন হন খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হ্যাপি সিংহ। অভিযোগ, হ্যাপির মাথায় ইট মেরে তাঁকে খুন করেন অন্য এক বন্দি শেখ নিজামুদ্দিন। সেই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি-কে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ২০ মে প্রেসিডেন্সি জেলেই আত্মঘাতী হন সনাতন সাঁতরা নামে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক বন্দি। পরপর বন্দিদের অপমৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী প্রেসিডেন্সি জেল পরিদর্শন করতে যান বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিভিন্ন বন্দির সঙ্গে কথা বলার পরে জেল সুপার নবীন সাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, ৫ মে হ্যাপিকে কোথায় খুন করা হয়েছিল? সুপার তাঁকে সেই জায়গায় নিয়ে যান। জায়গাটি ভাল করে ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সুপারের কাছে জানতে চান, বন্দিদের নানান সমস্যা হচ্ছে কেন। বন্দিদের অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে কেন, তা-ও জানতে চান তিনি।

কারা দফতর সূত্রের খবর, এ দিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে বেলা ১২টা নাগাদ প্রেসিডেন্সি জেলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ওই জেলের রক্ষীদের জানান, মুখ্যমন্ত্রী জেল পরিদর্শন করবেন। রক্ষীরা গেট খুলে দেন। মুখ্যমন্ত্রী পরিদর্শনে এসেছেন শুনে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন জেল সুপার নবীনবাবু। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানান, জেলের নিয়ম মেনেই তিনি ভিতরে ঢুকতে চান। তার পরে জেলের খাতায় নিজের নাম-পরিচয় লিখে ভিতরে ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা এসেছেন শুনে বন্দিদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ‘দিদি, দিদি’ বলে তাঁকে ডাকতে থাকেন বন্দিরা। জেল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ওখানে বন্দির সংখ্যা কত। সুপার জানান, সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দি মিলিয়ে আড়াই হাজার কয়েদি আছেন তাঁর জেলে। বিচারাধীন বন্দিরা মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ধরে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ার অভিযোগ জানান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানান, বিষয়টি বিচার বিভাগের অধীন। তিনি এর পরে বিভিন্ন সেল ঘুরে দেখেন। সুপারের কাছে জানতে চান, ওই সব সেল কত দিনের পুরনো? সুপার জানান, সেগুলি ব্রিটিশ আমলের। সেগুলি নিয়মিত সংস্কার হয় কি না, জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সুপার জানান, সংস্কারের কাজ নিয়মিতই হয়। বন্দিরা ঠিক সময়ে পর্যাপ্ত খাবার পান কি না, মুখ্যমন্ত্রী তা-ও জানতে চান।

জেল-কর্তৃপক্ষ পরে জানান, বন্দিদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, বন্দিদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে। তাতে বন্দিদের হতাশা দূর হবে।

mamata bandyoapadhyay happy murder presidency jail
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy