বান্ধবীকে দেওয়া ফোন-ই ধরিয়ে দিল প্রতারণায় অভিযুক্ত এক যুবককে!
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি ঋণ দেওয়ার নাম করে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ আসছিল লালবাজারে। তার সূত্র ধরেই তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা। কিন্তু অভিযুক্তদের বেশির ভাগ ফোনই বন্ধ ছিল। হঠাৎই একটি নম্বর বেজে ওঠে। ফোন ধরেন এক তরুণী। তিনি জানান, তাঁর পুরুষ বন্ধু তাঁকে একটি ফোন উপহার দিয়েছেন। সিমটাও তাঁর দেওয়া। তরুণীর এই বয়ান ধরেই তাঁর ওই পুরুষ বন্ধুকে পাকড়াও করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃত তাপস মণ্ডল প্রতারণা চক্রের অন্যতম চাঁই।
পুলিশ বলছে, সহজ শর্তে ঋণের ফাঁদ পেতে এ ভাবেই শহরে বাড়ছে প্রতারণা চক্রের রমরমা। সম্প্রতি এই প্রতারণার অভিযোগেই তাপস মণ্ডল নামে বালির ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের স্পেশ্যাল সেল। পুলিশের বক্তব্য, তড়িঘড়ি কিছু টাকার প্রয়োজন, এমন ব্যক্তিরাই এই সমস্ত ঠগবাজদের ফাঁদে পড়ছেন।
কী ভাবে ছড়াচ্ছে এই জাল?
পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন সংবাদপত্র বা ট্রেন-বাসের গায়ে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। থাকে এজেন্টের ফোন নম্বরও। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে বলা হয়, রাষ্টায়ত্ত বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়া হবে। বিনিময়ে ‘লোন ফি’ দিতে হবে।
কথার ফাঁদে ঋণগ্রহীতাদের এ ভাবেই ফাঁসিয়ে ভুয়ো আবেদনপত্রে সই করিয়ে, লোন ফি নিয়ে তার পরে সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোন একেবারে বন্ধ করে দেয় প্রতারকেরা।
প্রশ্ন উঠেছে, কেন ঋণ নেওয়ার সময় ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেননি ঋণগ্রহীতারা?.পুলিশ জানায়, কয়েক জন অভিযোগকারী ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতারকেরা জানায়, ব্যাঙ্কে গেলে অফিসারেরা অনেক কাগজপত্র চাইবেন। তা দিতে না পারলে ঋণ নেওয়া আটকে যাবে।
পুলিশ বলছে, তড়িঘড়ি টাকা পাওয়ার টানে অভিযোগকারীরা কেউই আর ব্যাঙ্কের শাখায় যাননি। পুলিশের বক্তব্য, ঋণ নিতে হলে ব্যাঙ্কের শাখাতেই যাওয়া উচিত। নইলে প্রতারণার শিকার হতে পারেন সাধারণ মানুষ।
এমন প্রতারকদের খোঁজ পেতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে গিয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতারকেরা ভুয়ো নথি দিয়ে ফোনের সিমকার্ড তুলত। ফলে ফোন বন্ধ করে দিলে তাদের সম্পর্কে তথ্যও মিলত না। সে দিক থেকে তাপসের গ্রেফতার অনেকটা পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার সামিল।
পুলিশ বলছে, বান্ধবীকে দেওয়া উপহারই যে কাল হয়ে দাঁড়াবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি তাপস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy