Advertisement
E-Paper

বিমানবন্দরে অফিসে চুরি, তদন্তে বসানো হল সিসিটিভি

কলকাতায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চারতলা অফিস বিল্ডিং-এর ভিতর থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে মাঝেমধ্যেই। সেই চুরি আটকাতে ওই বাড়িতে দিন কয়েক আগে বসানো হয়েছে ২০টি নজরদার ক্যামেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৪ ১৬:৫৮

কলকাতায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চারতলা অফিস বিল্ডিং-এর ভিতর থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে মাঝেমধ্যেই। সেই চুরি আটকাতে ওই বাড়িতে দিন কয়েক আগে বসানো হয়েছে ২০টি নজরদার ক্যামেরা।
সম্প্রতি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এক জয়েন্ট জিএম স্তরের অফিসারের ঘর থেকে তাঁর ব্যাগ। তাতে টাকা, এটিএম ও ক্রেডিট কার্ড এবং সেই কার্ডের পিন লেখা ডায়েরি ছিল। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করে সেই কার্ড দু’টি অকেজো করে দেওয়ার আগেই চুরি হওয়ার সওয়া এক ঘণ্টার মধ্যে সেই অফিসারের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তুলে নেওয়া হয় টাকা। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনা হয় সোনার মুদ্রা।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ, অফিসেরই এক বা একাধিক কর্মী এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করে এটিএম-এর ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করেছে পুলিশ। যিনি টাকা তুলেছেন, তিনি এক হাত দিয়ে খবরের কাগজে নিজের মুখ ঢেকে ছিলেন। কিন্তু তার মাঝেই বার দুয়েক দেখা গিয়েছে ওই ব্যক্তির মুখ। প্রাথমিক ভাবে সেই ছবি সঙ্গে মিলে যাচ্ছে ওই অফিসেরই এক কর্মীর সঙ্গে। কিন্তু তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগে পুলিশ আরও নিশ্চিত হতে চায়।
ভিআইপি রোড থেকে বিমানবন্দরের রাস্তায় ঢোকার পরে রাস্তার উপরেই পাঁচিল ঘেরা, চারতলা কাচে ঢাকা ওই বাড়ি। মূল গেটে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। গেটে ঢুকতেই রিসেপশন। বাইরের কেউ ঢুকলে সেখানে খাতায় নাম-ধাম লিখে তবে ভিতরে ঢোকা যায়। এই অবস্থায় বাইরের কেউ এসে চুরি করে চলে যাবে, সেই সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছে পুলিশ। এক অফিসারের কথায়, “তদন্ত চলার পাশাপাশি আমরাই সিসিটিভি বসিয়ে নজরদারি করতে বলেছি।” রিসেপশনের সামনে, লিফটের সামনে, বিভিন্ন তলায় করিডরে এই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ওই বিল্ডিং-এরই একটি ঘরে বসে অফিসেরই কোনও কর্মীকে দিয়ে ওই ক্যামেরাগুলি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই বিল্ডিং-এর চারতলায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অধিকর্তা, রিজিওনাল এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর-সহ তাবড় অফিসারদের বসার ঘর। ওই তলাতেই বসেন জয়েন্ট জিএম (অ্যাভিয়েশন সেফটি) অনুপ ঘোষাল। ঘটনার দিন তিনি বিকেলে অফিস থেকে বেরিয়ে শৌচাগারে যান। তাঁর ঘরের বাইরে তখন পিওনও ছিলেন না। অনুপবাবু ফিরে এসে দেখেন ব্যাগ নেই। শুরু হয় খোঁজ। চটজলদি নীচে নেমে প্রধান ফটক পর্যন্ত এসেও কাউকে পাওয়া যায়নি। অন্য অফিসারদের খবর দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনার ফাঁকেই তাঁর মোবাইলে পরপর দু’টি বার্তা আসে। দেখা যায়, কাছেই নাগেরবাজারে একটি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে তিন বার কার্ড ব্যবহার করে মোট ২৩৫০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। পরের বার্তা জানায়, নাগেরবাজারেরই এক সোনার দোকান থেকে ১৫,৫০০ টাকা দামের একটি সোনার মুদ্রা কেনা হয়েছে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে।
অনুপবাবু বলেন, “বিষয়টি আমি পুলিশকে জানিয়েছি। তারা তদন্ত করে দেখছে।” এর মাঝে এক মাস কেটে গিয়েছে ব্যাঙ্কের কাছ থেকে সিসিটিভি-র ছবি পেতে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এর আগেই এই বাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি ব্যাগ ‘হারানোর’ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নথিভুক্ত করানো হয়নি পুলিশের কাছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থ বিভাগে কর্মরত এক মহিলা অফিসারের ব্যাগ থেকে প্রায় ২৪ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়। ব্যাঙ্ক থেকে ফিরে তিনি ব্যাগে সেই টাকা রেখে ব্যাগটি ড্রয়ারের ভিতরে রাখেন। বাড়ি ফিরে দেখেন টাকা নেই।
একই ভাবে এক দিন দেখা যায় এক অফিসারের ব্যাগ দ্বিতীয় এক অফিসারের ঘরে পড়ে রয়েছে। দ্বিতীয় অফিসার ঘরে ছিলেন না। ফিরে এসে দেখেন, টেবিলে রয়েছে অন্য অফিসারের ব্যাগ। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, তাঁর ব্যাগটি উধাও হয়ে গিয়েছে। সেই ব্যাগ আর পাওয়া যায়নি।
অনুপবাবুর কথায়, “আমার সহকারী অফিসার দিল্লি গিয়েছিলেন। পিওন কয়েক দিন ধরে আসছিলেন না। যিনি এই কাজ করেছেন, তিনি আগে থেকে আমার উপরে নজর রেখেছিলেন।”

Airport Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy