Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মুখ লুকিয়ে আহিরণে খুলেছে মদের দোকান

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় সড়কের পাশে বন্ধ হয়েছিল মদের দোকান। সামনে পাঁচিল তুলে উল্টো দিকের দরজা খুলে দিয়ে সেই দোকান দিব্যি চলছে!

আড়াল: জাতীয় সড়কের দিকে সেই পাঁচিল।—নিজস্ব চিত্র

আড়াল: জাতীয় সড়কের দিকে সেই পাঁচিল।—নিজস্ব চিত্র

বিমান হাজরা
আহিরণ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় সড়কের পাশে বন্ধ হয়েছিল মদের দোকান। সামনে পাঁচিল তুলে উল্টো দিকের দরজা খুলে দিয়ে সেই দোকান দিব্যি চলছে!

মাঝখান থেকে, আগে বড় রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে যারা মদ কিনে চলে যেত, সেই সব অপরিচিত মুখের দল এখন ঘুরপথে গ্রামের ভিতর দিয়ে মদের দোকানে যাচ্ছে-আসছে। স্থানীয় লোকজন, বিশেষ করে মহিলারা অস্বস্তিতে পড়ছেন। দোকান বন্ধের দাবিতে বুধবার সুতি ১ ব্লক অফিস ও আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে ধর্না দিয়ে তাঁরা স্মারকলিপিও জমা করেছেন।

আহিরণ গ্রামের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেই রাস্তা থেকে ১৫ মিটার দূরে বছর দশেক ধরে চলেছে বিলিতি মদের দোকানটি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসার পরে সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সামনের দিকে পাঁচিল তুলে কয়েক দিন আগে সেটি ফের খোলা হয়। পিছনে যে দিক দিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা, জাতীয় সড়ক থেকে সেখানে পৌঁছতে গেলে প্রায় গোটা গ্রাম ঘুরে আসতে হয়। ওই ঘুরিয়ে নাক দেখানো দূরত্বকে আইনের উল্টো দিকে ঢাল হিসেবে খাড়া করেছেন দোকান মালিক।

গ্রামের তৃণমূল নেতা তথা সুতি ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মনোজ দাস বলেন, ‘‘শুধু একটা পাঁচিল তুলে আগেরই দোকানঘরের পিছনের দরজায় ফের কাউন্টার করে ফেলা হয়েছে।’’ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ধনঞ্জয় ঘোষের কথায়, ‘‘অচেনা লোকেরা গ্রামের ভিতর দিয়ে মদের দোকানে যাতায়াত করায় পরিবেশ খারাপ হচ্ছে। দু’দিন আগে মদ্যপদের হাতে মার খেয়েছেন এলাকার চৈতন্য বসাক ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের কিশোরী মেয়ের শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা হয়। এর পরেই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন গ্রামের মহিলারা।’’

গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণা ঘোষ বলেন, “সকাল থেকেই অচেনা বহিরাগতদের আনাগোনা শুরু হয়ে যাচ্ছে। চলছে রাত পর্যন্ত। অসহ্য হয়ে ওঠায় বিডিও ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” গ্রামের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সুদীপ্তা দাসের প্রশ্ন, “দোকান ঘর বা জাতীয় সড়ক কোনওটাই তো সরেনি। তা হলে দোকান খোলে কী করে? এ কেমন আইন?’’

নিয়ম অনুযায়ী, মদের দোকানের লাইসেন্স জমির দাগ নম্বর ধরে হয়। অর্থাৎ, রাস্তা থেকে জমিটি কত দূরে, সেটাই বিবেচ্য। দোকানের মুখ কোন দিকে, তাতে কিছু আসে-যায় না। দোকানের মালিক গৌতম দাস অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমি সরকারি অনুমতি নিয়েই দোকান চালাচ্ছি। বুধবারই সব নথিপত্র পুলিশকে দেখিয়ে এসেছি।’’

জেলা আবগারি দফতরের ডেপুটি কালেক্টর ইমরান আলির ব্যাখ্যা, ‘‘আহিরণ পঞ্চায়েতের জনসংখ্যা ২০ হাজারের কম। রাস্তা থেকে দোকানের দূরত্ব ২২০ মিটার হতে হবে। গ্রামের মধ্যে দিয়ে ঘুরপথে যে রাস্তা দোকান গিয়েছে, তা ৩০০ মিটারের বেশি। তাই ওই দোকানটি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Liquor Shop National highway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE