Advertisement
E-Paper

বাবার মৃত্যুতে বাড়ি ফেরার পথে ‘বাধা’ রাজ্যের সীমানায়

সন্ধ্যা পর্যন্ত বিঙ্কু বাড়ি না পৌঁছনোয় উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০২:২৯
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের ইনদঔর থেকে। সঙ্গে ‘লকডাউন পাস’। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার মুখে, পশ্চিম বর্ধমানের ডুবুরডিহি সীমানায় পুলিশের ‘বাধা’য় আটকে পড়েন সেনাস্কুলের কর্মী বিঙ্কু বিশ্বাস। শেষে শুক্রবার বিকেলে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ের সেনাছাউনির গাড়ি এসে তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে যায়।

১৫ এপ্রিল বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে মারা যান বিঙ্কুবাবুর বাবা গাইঘাটার বেড়ি এলাকার বাসিন্দা সুকুমার বিশ্বাস (৬০)। তাঁকে ১৪ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বিঙ্কুবাবু জানান, বাড়ি থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাবার মৃত্যুর শংসাপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই শংসাপত্র নিয়ে তিনি বিভাগীয় আধিকারিকদের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে ‘লকডাউন পাস’ নেন। তাঁর বাবার শরীরে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত কোনও সংক্রমণ নেই বলে প্রশাসনের কাছে মুচলেকাও জমা দেন। এর পরে ১৫ এপ্রিলই তিনি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘পথে কোনও রাজ্যের সীমানায় আমাকে আটকানো হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ পশ্চিম বর্ধমানের ডুবুরডিহি সীমানায় পৌঁছনোর পরেই পুলিশ আমাকে আটকে দেয়। কিছুতেই এ রাজ্যে ঢুকতে দিচ্ছিল না। পুলিশ বলছিল, নবান্নে খবর পাঠানো হয়েছে। অনুমতি এলে ছাড়া হবে।’’ করোনা সংক্রমণ নিয়ে নজরদারিতে কড়াকড়ি করার পাশাপাশি, পুলিশ-প্রশাসনকে ‘মানবিক’ হতে বার বার বলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে বিঙ্কুবাবুকে আটকানো হল কেন? আসানসোলের পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈনের সঙ্গে এ দিন বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব আসেনি এ সংক্রান্ত মেসেজ-এর। তবে কমিশনারেটের এক পুলিশ-কর্তা দাবি করেন, ‘নবান্ন’ থেকে পরিষ্কার নির্দেশ রয়েছে, যথাযথ কাগজপত্র না থাকলে অন্য রাজ্য থেকে কাউকে এ রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না। নথি পরীক্ষার জন্য ওই যুবককেও আটকানো হয়।

সে পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকালে বিঙ্কুবাবুর দফতরের আধিকারিকেরা পানাগড়ের সেনা ছাউনির আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ডুবুরডিহি সীমানায় এসে দেখা করে, খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে যান। বিকেলে পানাগড় সেনাছাউনি থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স এসে তাঁকে সীমান্ত থেকে সেনাছাউনিতে নিয়ে যায়। বিঙ্কুবাবুর আক্ষেপ, ‘‘এতটা পথ এসেও বাবাকে শেষ দেখা দেখতে পেলাম না!’’

সন্ধ্যা পর্যন্ত বিঙ্কু বাড়ি না পৌঁছনোয় উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। তাঁর স্ত্রী চৈতালিদেবী বলেন, ‘‘বাড়িতে আমি আর শাশুড়ি। করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে চারিদিকে। এ সময়ে আমাদের সাহায্য করার কেউ নেই। স্বামীর বাড়ি আসাটা খুবই জরুরি। শুনেছি, সেনা বাহিনীর গাড়িতে করে আসছেন। কিন্তু ওঁর ফোন বন্ধ বলছে। চিন্তায় রয়েছি।’’

Lockdown Coronavirus COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy