Advertisement
E-Paper

ববি হাকিমকে তীব্র কটাক্ষ, মুকুলের হয়ে মুখ খুলে ঐক্যের বার্তা দিলীপের

মুরলীধর সেন লেনে কান পাতলেই সম্প্রতি শোনা যাচ্ছিল, নব্য বিজেপিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পুরনো নেতারা।

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ২২:৩৪
প্রার্থীতালিকা ঘোষিত হওয়ার মুখোমুখি এসে দলে জোরদার ঐক্যের বার্তা দেওয়ার চেষ্টায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি।

প্রার্থীতালিকা ঘোষিত হওয়ার মুখোমুখি এসে দলে জোরদার ঐক্যের বার্তা দেওয়ার চেষ্টায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি।

যত বাড়ছে দল, অন্দরমহলে তত ঘনিয়ে উঠছে অশান্তির মেঘ। বাংলার বিজেপি-কে নিয়ে এই রকম চর্চাই শোনা যাচ্ছিল রাজনৈতিক শিবিরে। দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়কে ঘিরে দুটো সমান্তরাল গোষ্ঠী তৈরি হয়ে যাওয়ার জল্পনা চলছিল। কিন্তু প্রার্থীতালিকা ঘোষিত হওয়ার মুখোমুখি এসে জোরদার ঐক্যের বার্তা দেওয়ার চেষ্টায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি। মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও রকম মতানৈক্য নেই, আনন্দবাজারকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে শনিবার এমনটাই দাবি করলেন দিলীপ। এতেই থামলেন না, মুকুলের পক্ষে মুখ খুলে তীব্র আক্রমণ করলেন ফিরহাদ হাকিমকে।

মুরলীধর সেন লেনে কান পাতলেই সম্প্রতি শোনা যাচ্ছিল, নব্য বিজেপিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পুরনো নেতারা। বিভিন্ন দল ছেড়ে যে নামী নেতারা সম্প্রতি বিজেপিতে ঢুকছেন বা ঢুকতে চাইছেন, তাঁদের অবাধে স্বাগত জানানো হলে দলের পুরনো নেতারা লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাবেন তো? এই রকম প্রশ্নই রাজ্য বিজেপির অন্দরে উঠতে শুরু করেছে বলে গুঞ্জন চলছিল।

কিন্তু দিলীপ ঘোষ শনিবার বললেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে এ রকম দল পরিবর্তন হতেই থাকে। আমরা সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। অন্য দল থেকে আসা যোগ্য নেতারা সব সময়েই স্বাগত।’’ উদাহরণও তুলে ধরেছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘অসমে আমরা যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেছি, সেই সর্বানন্দ সোনোয়াল অসম গণ পরিষদের নেতা ছিলেন। হিমন্তবিশ্ব শর্মা এখন গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির সবচেয়ে বড় নেতাদের অন্যতম। তিনি কংগ্রেসে ছিলেন।’’ দিলীপের দাবি, অন্যান্য দলে যে সব যোগ্য নেতারা রয়েছেন, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে চাইলে, দল বরাবরই স্বাগত জানিয়েছে এবং তাঁদের উপযুক্ত জায়গাও দেওয়া হয়েছে। সুতরাং মুকুল রায় বড় দায়িত্ব পেলে কারও আপত্তির কিছু থাকতে পারে না— ইঙ্গিত দিলীপের।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এতেই থামেননি দিলীপ। তৃণমূল নেতা তথা কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সম্প্রতি মুকুল রায়কে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, দিলীপ এ দিন সেই মন্তব্যেরও তীব্র বিরোধিতা করেছেন। মুকুল রায় যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তৃণমূলটাকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন, এখন বিজেপি-টাকে ‘হাইজ্যাক’ করছেন— ফিরহাদ শুক্রবার এই রকম একটি মন্তব্য করেছিলেন। মুকুলকে আর তা নিয়ে মুখ খুলতে হল না। মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দিলীপ ঘোষ জবাব দিলেন ফিরহাদকে। বললেন, ‘‘ববি হাকিম যেটা বলেছেন, সেটা হয়তো নিজের দুঃখ থেকে বলেছেন। কারণ তিনি সারা জীবন কর্মচারীই থাকবেন, কোনও দিন নেতা হতে পারবেন না। প্রণববাবুর মতো শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিও কর্মচারীই ছিলেন কংগ্রেসের, তিনি কোনও দিন নেতা হতে পারেননি, তাঁর কোনও অধিকার ছিল না।’’ দিলীপের দাবি— কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্র চলে এবং সেই সংস্কৃতিতেই তৃণমূলও চলছে, তাই ফিরহাদ হাকিমদের অধিকার ওই দলে চিরকাল সীমাবদ্ধই থাকবে। দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘ববি হাকিম বা বাকিরা সারা জীবন কর্মচারী আর চাকর-বাকরের কাজ করবেন, কোনও দিন নেতা হতে পারবেন না।’’

ভারতের প্রথম লোকসভা নির্বাচন নিয়ে এই তথ্যগুলি জানেন?

আরও পড়ুন: জগদ্দলে অর্জুন অনুগামীর উপর হামলা, থানা ঘেরাও বিজেপির, জ্যোতিপ্রিয় বললেন, গুন্ডামি ছুটিয়ে দেব

মুকুল রায়ের হাত ধরে বা অন্য কোনও সূত্রে যাঁরা এখন বিজেপিতে ঢুকতে চাইছেন, তাঁদের কাউকে স্বাগত জানাতেই তাঁদের আপত্তি নেই বলে দিলীপ এ দিন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এখন দরজা বড় করে দিয়েছি, মন বড় করে দিয়েছি, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। যাঁর যোগ্যতা রয়েছে, তিনিই সামনে যাবেন।’’

আরও পড়ুন: পক্ষপাতদুষ্ট হলেই সরিয়ে দেওয়া হবে, কড়া বার্তা উপনির্বাচন কমিশনারের, নজরে ৪ ডিএম, ৩ এসপি

কিন্তু সপ্তাহখানেক আগেই তো উল্টো মন্তব্য শোনা গিয়েছিল।শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানানোর প্রশ্নে তো এই দিলীপ ঘোষই সে দিন জানিয়েছিলেন যে, শোভনবাবু বিতর্কিত, তাকে স্বাগত জানানো নিয়ে দলে দ্বিমত রয়েছে। এ দিন রাজ্য বিজেপির সভাপতির জবাব, ‘‘বিতর্ক থাকার কথা বলা আর স্বাগত না জানানো এক বিষয় নয়। বিতর্ক থাকলে দলে নেওয়া যাবে না, এ রকম আমরা মনে করি না। বিতর্ক সবাইকে নিয়ে রয়েছে, কাকে নিয়ে নেই? রাজনীতি করলে বিতর্কে জড়াতেই হয়।’’ ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমাকে নিয়ে বিতর্ক নেই? বিতর্ক না হলে কে জানত, দিলীপ ঘোষ কে?’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবরআমাদের রাজ্য বিভাগে।)

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ Dilip Ghosh Mukul Roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy