Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

শঠে শাঠ্যং, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিলীপের

তমলুক কেন্দ্রের মধ্যে থাকা সেই ময়নাই যে লোকসভা নির্বাচনে তুরুপের তাস তা বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

কর্মিসভায় দিলীপ। পাশে তমলুক কেন্দ্রের প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর। —নিজস্ব চিত্র।

কর্মিসভায় দিলীপ। পাশে তমলুক কেন্দ্রের প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ময়না শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই ময়নার বাকচা পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এলাকা। প্রধান নির্বাচনে তৃণমূল জয়ী হলেও এলাকায় বিজেপি কর্মীদের ‘সন্ত্রাসে’ তিনি দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত অফিসে যেতে পারছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের বেশকিছু কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে ময়না বিধানসভা এলাকার মধ্যে থাকা পাশের তমলুক ব্লকের শ্রীরামপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি প্রধান মঞ্জু বেরার বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে মঞ্জুদেবী তৃণমূলে যোগ দেন।

তমলুক কেন্দ্রের মধ্যে থাকা সেই ময়নাই যে লোকসভা নির্বাচনে তুরুপের তাস তা বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার তমলুকের শ্রীরামপুরে দলের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ময়নায় আমাদের দলের কর্মীদের উপর তৃণমূল অত্যাচার করেছিল। পঞ্চায়েতের ভোটে জেতার পরেও আমাদের প্রধানকে জোর করে, ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আমাদের কর্মীর বাড়িঘর ভাঙা হয়েছে। অনেককে গ্রামছাড়া করা হয়েছে। আমরাও তার প্রত্যুত্তর দিয়েছি। ময়না জনসভায় মানুষের উপস্থিতি দেখেই বুঝেছি এখানকার মানুষ পরিবর্তন চাইছেন।’’
এ দিন কর্মিসভায় ময়না তিলখোজা এলাকার পঞ্চাশ জন তৃণমূল সমর্থক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি জেলা বিজেপি নেতৃত্বের। দিলীপবাবু তাঁদের কয়েকজনের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ধর্মতলায় যান। রোজ কেন ওখানে বিক্ষোভ হচ্ছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবস্থা কী এতেই বোঝা যাচ্ছে।’’

প্রচার সভায় দিলীপ ঘোষ ও সায়ন্তন বসুর বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্ররোচনার অভিযোগ জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। এই বিষয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমরা যখন মার খেতাম তখন পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে যেতাম। আমরা এখন আর অভিযোগের মধ্যে নেই। যারা রাজনৈতিকভাবে আমাদের সঙ্গে লড়াই করতে পারছে না তারাই এখন নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বীরভূমে বিজেপির সর্বভারতীয় অমিত শাহ দাঁড়ালেও জিততে পারবে না বলে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের দাবি নিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘অমিত শাহকে দরকার হবে না। যে প্রার্থী দিয়েছি তাতে ওরা জিতে দেখাক। এবার এমন ঝড় আসবে অনুব্রতের চাল উড়ে যাবে। পুলিশকে নিয়ে উনি অনেক রাজনীতি করেছেন। পুলিশ ছাড়া এবার ভোটে জিতে দেখান।’’ অনুব্রতর নকুলদানা প্রসঙ্গে দিলীপের জবাব, ‘‘যারা এটা দিচ্ছে তারাই খাবে। ওসব ড্রামাবাজি করে রাজনীতি হয় না। এতদিন পুলিশকে পিছনে নিয়ে অনেক রাজনীতি করেছেন। পুলিশ এবার সামনে আসবে। তখন বুঝতে পারবেন।’’

বিশাখাপত্তনমে চন্দ্রবাবু নাইডুর সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, ‘‘আজকে ওঁকে কেউ ডাকছে না। কারন উনি যাঁর কাছেই গিয়েছেন সেই ডুবেছে। এ বার চন্দ্রবাবু ডুবছে। কংগ্রেস, বিজেপি ছেড়ে দিয়েছে। দিদিমণির কোনও কাজ নেই তাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উনি পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ভাবুন। যা আসন আছে তার অর্ধেক জিতে দেখান! ৪২ টা তো অনেক দূর।’’

নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করা তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকে কী ভাবে প্রভাবিত করতে হয় গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ দেখেছে।’’ কর্মিসভায় তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর, দলের জেলা পর্যবেক্ষক সমীরণ সাহা ও তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস প্রমুখ ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE