Advertisement
০৪ মে ২০২৪

মহুয়া আসতেই ফিসফাস, ‘ঠিক যেন সিনেমা আর্টিস্ট’

ছিপছিপে চেহারার মহিলা মাঠের উপচে পড়া ভিড়ের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র।

করমর্দন: নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় পাটপুকুর হাইস্কুলের মাঠে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা দেখতে আসা দর্শকদের সঙ্গে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। রবিবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

করমর্দন: নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় পাটপুকুর হাইস্কুলের মাঠে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা দেখতে আসা দর্শকদের সঙ্গে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। রবিবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

সুস্মিত হালদার
পলাশি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০১
Share: Save:

বলটা উইকেট ছিটকে দিতেই তিনি শিশুর মতো হাততালি দিয়ে উঠলেন। সে দিকে তাকিয়ে ভিড়ের মধ্যে থেকে এক মহিলা বলে ওঠেন, “দেখ দেখ। ঠিক যেন সিনেমা আর্টিস্ট!”

যাঁকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তি তাঁর মাথার উপরে তুলে রাখা দামি রোদ চশমা। আকাশী নীল শাড়ি। কপালে লাল টিপ। ছিপছিপে চেহারার মহিলা মাঠের উপচে পড়া ভিড়ের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। তাঁকে ঘিরে কোথাও যেন একটা স্টার সুলভ বৃত্ত তৈরি হয়ে আছে। শত্রুও কুর্নিশ করবেন তাঁর পরিশ্রমের ক্ষমতা আর প্রচারের জেট গতিকে। রবিবারের প্রচারে তিনি হাজির হয়েছিলেন পাটপুকুরের ক্রিকেট টুর্নামেণ্টে।

প্রায় দুই মাস ধরে চলছে এই টুর্নামেন্ট। রবিবার ছিল ফাইনাল। এ দিন সকালে করিমপুরে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেরেন কৃষ্ণনগরে। তার পর ছোটেন নাকাশিপাড়ার দোগাছি পাটপুকুর গ্রামে। মাঠে তখন কয়েকশো লোক। খেলার মাঠকে জনসংযোগের ক্ষেত্র হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। একগাল হাসি নিয়ে খেলা দিব্যি উপভোগ করলেন তৃণমূল প্রার্থী। কখনও শিশুর মতো হাত তালি দিচ্ছেন কখনও বা কর্মীদের বলছেন, ‘‘দেখেছেন কি অসাধারণ ক্যাচটা নিল!’’ তারই মধ্যে টুকটাক সাংগঠনিক কথা স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

খেলা শেষে মাঠেই তাঁকে ঘিরে ধরেন নিজস্বী-শিকারিরা। হাসিমুখে তাঁদের আব্দার মেটান। তার পর রওনা দেন পরবর্তী পথ সভার দিকে। গাড়ি ছাড়ার আগে জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে কর্মীদের বলেন, ‘‘ফেসবুকটা ব্যবহার করো, ফেসবুকে প্রচারটা খুব দরকার।’’ গ্রামের রাস্তা ছেড়ে গাড়ি ওঠে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। ঝাঁ চকচকে রাস্তা ধরে গাড়ি ছোটে পলাশির দিকে। গাড়িতে বাংলা গান চালিয়ে দেন মহুয়া। মাঝে মাঝে গলা মেলাতে থাকেন। আত্মবিশ্বাসী গলায় বলেন, ‘‘জিতবই। দেখবেন বিজেপি কোনও তল পাবে না। সেকেন্ড পজিশনে থাকবে সিপিএম।’’ হাতে ঠোঙা থেকে ছোলা আর বাদাম ভাজা নিয়ে মুখে পুরতে-পুরতে বলতে থাকেন কোথায় কত লিড দেবেন।

কিন্তু যে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের উপর তাঁর জয় নির্ভর করছে সেই ভোট তিনি কত টুকু ধরে রাখতে পারবেন? মহুয়ার উত্তর, ‘‘আমার হিসেব পঞ্চায়েত ধরে-ধরে। ভোটের ময়দানে লড়বেন বুথ স্তরের কর্মীরা। আমি সরাসরি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’’ বিভিন্ন জায়গায় একাধিক পথসভা, জনসভা করে রাতে যখন কৃষ্ণনগর ফিরছেন তখনও তিনি ক্লান্তি নন। গানের তালে সুর ভাঁজতে ভাঁজতে খানিকটা আনমনে বলেন, ‘‘কী ভাবে জেতার মার্জিন আরও বাড়ানো যায় সেটাই এখন ভাবছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE