Advertisement
০৫ মে ২০২৪
general-election-2019/west-bengal

‘গদ্দারদের গুন্ডামি’ চলবে না, দিদি আছে, বলে গেলেন মমতা

ভাটপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র এবং বিজেপি অর্জুন-পুত্র পবন সিংহকে প্রার্থী করার পরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের তীব্রতা আরও বেড়েছে।

জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাটপাড়া ও পলতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০৩:৩৮
Share: Save:

তৃণমূল ছেড়ে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিজেপিতে যাওয়া অর্জুন সিংহকে কার্যত ‘গুন্ডা’ বলে দেগে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাকসাইটে প্রাক্তন বিধায়ক ও পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুনের এলাকায় দাঁড়িয়ে তাঁর বার্তা, গুন্ডামি হয়েছে যথেষ্ট। আর নয়। এই হুঁশিয়ারির সঙ্গেই সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলে গেলেন, ‘‘এই এলাকা এর পরে আমি নিজে দেখব। ভয় পাবেন না। দিদি আছে!’’

ভাটপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র এবং বিজেপি অর্জুন-পুত্র পবন সিংহকে প্রার্থী করার পরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের তীব্রতা আরও বেড়েছে। দু’দিন আগেই মধ্যরাত পর্যন্ত চলা গোলমাল নিয়ন্ত্রণে কমব্যাট ফোর্স ও র‌্যাফ নামাতে হয়েছে। ভাটপাড়ায় প্রচারে গিয়ে বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গ টেনেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘গুন্ডাগিরি অনেক হয়েছে। এখানে আরএসএসের পাণ্ডারা দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে। পরশুও চেষ্টা করেছে। কোনও দাঙ্গাবাজকে ছাড়ব না!’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অনেক গুন্ডামি হয়েছে। সব খবর রাখি। ভোট তো কয়েক দিনে মিটে যাবে। তার পরে কী হবে? আপনাদের তো এলাকায় শান্তিতে থাকতে হবে। মনে রাখবেন, হম সে যো টকরায়েগা, ওহ্ চুরচুর হো যায়েগা!’’

তৃণমূলে ১৮ বছর বিধায়ক থাকার পরে অর্জুন কেন এখন বিজেপিতে গেলেন, তার কারণও এ দিন ব্যাখ্যা করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু কিছু মানুষের চাওয়ার শেষ নেই। দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেও তাদের সন্তুষ্ট করা যায় না! কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদ— সব চাই! আমার কাছে লোকসভার টিকিট চেয়েছিল। আমি দিইনি।’’ নাম না করেই মুকুল রায়ের সঙ্গে অর্জুনের সম্পর্কের কথা এনে হিন্দিতে তাঁদের দু’জনকে ‘বড়া গদ্দার’ ও ‘ছোটা গদ্দার’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। ভাটপাড়া উপনির্বাচনের প্রার্থী মদনকে ‘কাজের ছেলে’ বলে উল্লেখ করে মমতা ডাক দিয়েছেন, ‘‘বাপ-বেটা (অর্জুন-পবন), দু’জনেরই জমানত জব্দ করে দিন!’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভাটপাড়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিন সভা ছিল পলতায়, যা নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিংহ অর্জুনেরই নিকটাত্মীয় এবং তাঁর দলত্যাগ নিয়েও জল্পনা যথেষ্ট। মঞ্চে সুনীলকে পাশে বসিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন দলনেত্রী। পলতা এলাকার বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ভোট চাই বলে নরেন্দ্র মোদীর এখন ঠাকুরবাড়িতে যাওয়ার কথা মনে পড়ল! আমার মতুয়া ভাই-বোনেরা তা ধরে ফেলেছেন। তাঁরা জানেন, আমি কত বার ‘বড়মা’র কাছে গিয়েছি। নিজের উদ্যোগে হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করিয়েছি।”

তাঁর পুরনো দলের নেত্রীর তোপের অবশ্য জবাব দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অর্জুন। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘দিদিকে দেখেই গদ্দারি শিখেছি। উনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল, এনডিএ ছেড়ে ইউপিএ— অনেক রকম গদ্দারি করেছেন। আর আমি জানিয়েই এসেছিলাম, আপনার দল ছেড়ে যাচ্ছি।’’ এলাকায় গুন্ডামি এবং পরিবারতন্ত্র চালানোর প্রশ্নেও তাঁর জবাব, ‘‘ওঁর দলে যখন ছিলাম, তখন সব ভাল ছিল! তৃণমূলেই তো এক এলাকায় এক পরিবার থেকে সাংসদ, মন্ত্রী, পুরসভার চেয়ারম্যান— সব আছে!’’ এই চাপানউতোরের মাঝে সিপিএম প্রার্থী গার্গী চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এই এলাকা অপরাধীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বর্তমান বিজেপি প্রার্থী শাসক দলে থেকেই যা খুশি করেছেন। তখন তো কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। তৃণমূল আর বিজেপি সবেতেই এক পথের পথিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE