Advertisement
E-Paper

মোদীর জোড়া ফলা তৃণমূল-কংগ্রেসকে

কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৮
তৃণমূল এবং কংগ্রেসকে আক্রমণের নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

তৃণমূল এবং কংগ্রেসকে আক্রমণের নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

লোকসভা ভোটের আগে বুধবার পশ্চিমবঙ্গে প্রথম নির্বাচনী প্রচারসভায় এসে যুগপৎ তৃণমূল এবং কংগ্রেসকে আক্রমণের নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুপুরে শিলিগুড়িতে তাঁর বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়ে রইল তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ। আর বিকেলে কলকাতার ব্রিগেডে সবচেয়ে বেশি শব্দ ব্যয় করলেন কংগ্রেসকে বিঁধতে। অন্য দিকে, কোচবিহারের দিনহাটায় এ দিনই তাঁর প্রথম নির্বাচনী প্রচারসভায় বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগাভাগি না করতে বাম এবং কংগ্রেস সমর্থকদের কাছে আবেদন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস, সিপিএমকে ভোট দেবেন না। বাম, কংগ্রেস সমর্থকেরা জোড়া ফুলেই ভোট দিন। রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে পারে একমাত্র তৃণমূল।’’

কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার। মোদীর ব্রিগেডের বক্তৃতায় অনেকটা অংশ জুড়ে ছিল ওই ইস্তাহারের সমালোচনা। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ইস্তাহারে যা বলা হয়েছে, তা আদতে ভারতীয় সেনাকে দুর্বল করবে। সেনাবাহিনীর রক্ষাকবচ কেড়ে নেবে। কংগ্রেস দেশকে অস্থির করতে চাইছে।’’ এই প্রেক্ষিতে মোদীর আশ্বাস, ‘‘আপনাদের এই চৌকিদার কংগ্রেসের ইস্তাহার আর দেশের সুরক্ষার মাঝখানে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ভারতের জওয়ানরা আগেও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বিমান হানায় সক্ষম ছিলেন। ভারতের বৈজ্ঞানিকরাও আগে মিসাইল দিয়ে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পারতেন। কিন্তু বিগত কংগ্রেস সরকারের তা করে দেখানোর হিম্মৎ ছিল না। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে তোষণনীতির জন্য ওরা সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথা নত করেছে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের ইস্তাহারের এক্সপায়ারি ডেট ২৩ মে। কংগ্রেসও শেষ হয়ে যাবে। তাদের ইস্তাহারও শেষ হয়ে যাবে।’’ এ সম্পর্কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কংগ্রেস কখনও নিজের ঢাক নিজে পেটায় না। মোদী নিজের ঢাক নিজে পেটান। ২০১৪ সালে দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতিই উনি পালন করতে পারেননি।’’

কংগ্রেস থেকে বেরনো তৃণমূলও ‘একই পাপের ভাগীদার’ বলে অভিযোগ মোদীর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করছে। কিন্তু ওই বিল পাশ হলে দেশের ভাল হবে।’’ যার জবাবে দিনহাটার সভায় মমতা বলেন, ‘‘ওই বিলে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে আসা কেউ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলে তাঁকে প্রথমে ছ’বছরের জন্য বিদেশি বানিয়ে দেবে। তার পর দয়া-দাক্ষিণ্য হলে দেশে আনতে পারে। বাংলায় আমরা এ সব হতে দিই না।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ব্রিগেডে কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র নিয়ে কটাক্ষের প্রসঙ্গে মোদী টেনে আনেন মমতা এবং তাঁর ভাইপো অভিষেকের কথা। নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘৭২ বছর দেশ পরিবারতন্ত্র দেখেছে। বাংলাও এখন পরিবারতন্ত্রে ভুগছে। বুয়া-ভাতিজা মিলে বাংলার সম্পদ লুঠছে।’’

সেই কটাক্ষ ফিরিয়ে দিয়ে দিনহাটার সভায় মমতা পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূলকে বলছে লুটেরা! তোমার না বিজেপির— কার টাকা লুটেছে?’’ কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নিশীথ প্রামাণিক। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তদন্তের চিঠি দেখিয়ে মমতার অভিযোগ, ‘‘আপনারা (বিজেপি) লুটেরাকে টিকিট দেন। অস্ত্র পাচারকারীকে টিকিট দেন।’’ এ দিন আরও এক বার প্রধানমন্ত্রীকে মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন মমতা।

এ রাজ্যে সর্ব স্তরের মানুষের উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে মমতার আরও দাবি, ‘‘বাংলার সঙ্গে পাঙ্গা নিয়ে লাভ নেই। আগে দিল্লি সামলাও। পরে বাংলা দেখবে।’’ এ রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেস গোপনে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলেও তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতেই কোচবিহারের বাম এবং কংগ্রেস সমর্থকদের জোড়া ফুলে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান তিনি।

ব্রিগেডে মোদীর বক্তব্য, ‘‘২০১৪ সালে জনতার ভোট দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলের দরজায় পৌঁছে দিয়েছিল। ২০১৯-এর পরে দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। আমরা এবং আপনারা মিলে যে সরকার বানাব, সেখানে তৃণমূল এবং বামেদের তোলাবাজি, গুণ্ডাগিরি আর থাকবে না।’’ দিনহাটায় মমতার পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান। যদি ক্ষমতা থাকে, গায়ে হাত দিয়ে দেখুন!’’

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ Modi Mamata Brigade Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy