Advertisement
E-Paper

বিক্ষিপ্ত অশান্তি-সংঘর্ষ-ভোটযন্ত্র-ভাঙচুর, আক্রান্ত সাংবাদিক- প্রার্থীও

নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজ্যের ৭ কেন্দ্রে গড়ে ভোট পড়েছে ৭৩.৯৭%।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ০৩:৫৭
মুখ থুবড়ে: তাড়া করতে গিয়ে মাটিতে অর্জুন সিংহ। নিজস্ব চিত্র

মুখ থুবড়ে: তাড়া করতে গিয়ে মাটিতে অর্জুন সিংহ। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চম দফায় এসে আরও বেশি হিংসার অভিযোগে উত্তপ্ত হল বাংলায় লোকসভার ভোট। বিক্ষিপ্ত অশান্তি, সংঘর্ষ, বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল। পাঁচ জন প্রার্থীর আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগও উঠল। এমনকি, হামলার হাত থেকে বাদ গেলেন না সাংবাদিক ও চিত্র-সাংবাদিকেরাও।

নির্বাচন কমিশনের হিসেবে, বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজ্যের ৭ কেন্দ্রে গড়ে ভোট পড়েছে ৭৩.৯৭%। তার মধ্যে উলুবেড়িয়ায় ভোটদানের হার সর্বাধিক ৭৭.৫৭% এবং হাওড়ায় সর্বনিম্ন ৬৭.৫৯%। এই পর্বের ভোটে সকলের নজর ছিল ব্যারাকপুর কেন্দ্রের দিকে। সেই কেন্দ্রে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭১.২৮%।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে অর্জুন সিংহ ব্যারাকপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই ওই এলাকায় উত্তেজনা তুঙ্গে। ভোটের আগে সেই উত্তাপ এবং সংঘর্ষের রেশ গড়িয়েছে ভোটের দিনেও। মোহনপুরে বুথে ঢুকতে গিয়ে প্রার্থী অর্জুন তৃণমূল সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান শুনে পাল্টা তেড়ে যেতে গিয়ে পড়েও গিয়েছেন তিনি। আবার অর্জুন-বাহিনী ভোট লুটের চেষ্টা করছে, এই অভিযোগে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করেছেন তৃণমূল সমর্থকেরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী গিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করেছে। ব্যারাকপুর স্টেশন লাগোয়া শহিদ মঙ্গল পাণ্ডে রোডে নাট্যকার চন্দন সেনের ফ্ল্যাটের নীচে তৃণমূলের হামলায় এক শিক্ষক-সহ বেশ কয়েক জন রক্তাক্ত হয়েছেন বলে সিপিএমের অভিযোগ। তবে আক্রান্ত হয়েও তাঁরা ভোট দিয়েছেন।

ব্যারাকপুরেরই আমডাঙায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ এসেছে। পুলিশ লাঠি চালিয়েছে এবং তাতে মহিলা ভোটারেরাও মার খেয়েছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সংবাদমাধ্যমের গাড়িতে চড়াও হওয়ার অভিযোগ এসেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। দিনভর তৃণমূল এবং কোথাও কোথাও স্থানীয় মানুষের তাড়ায় ছুটে বেড়ানোর পরেও অর্জুন অবশ্য দাবি করেছেন, ব্যারাকপুরে তিনিই জিতছেন। তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীর পাল্টা দাবি, ওই কেন্দ্রে বিজেপি তৃতীয় স্থানে থাকবে!

বনগাঁ কেন্দ্রের হিংলিতে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। হুগলি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ হয়েছে ধনেখালিতে। লকেটের গাড়িতেও তৃণমূল সমর্থকেরা ভাঙচুর করেছেন বলে বিজেপির অভিযোগ। ধনেখালি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার বুথে পুনর্নির্বাচন চেয়ে সন্ধ্যায় জেলার রিটার্নিং অফিসারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন লকেট, বসেছিলেন ধর্নাতেও। হাওড়ায় আবার তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বুথে ঢুকতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে প্রহৃত হয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ।

তৃণমূলের তরফে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘বিজেপি ভাটপাড়ায় পুনর্নির্বাচন চেয়েছে দিল্লি গিয়ে। বাংলার মানুষকে অপমানের অধিকার ওদের কে দিল? এটা তো কমিশনের দেখার কাজ। ওদের প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন, ওঁর প্রার্থী-পদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’’

রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের অভিযোগ, ‘‘৭টি লোকসভা কেন্দ্রেরই ১৫০ থেকে ২০০ বুথে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে অশান্তি করেছে। বহু বুথে আমাদের পোলিং এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি বা তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বুথের সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও ১০০ মিটার দূরে রাজ্যের পুলিশ তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের ১৪৪ ধারা ভাঙতে সাহায্য করেছে। ভোট নিরপেক্ষ হয়নি।’’ কমিশনকে চিঠি দিয়ে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার অভিযোগ করেছেন, অর্জুন, লকেট, দেবজিৎ সরকার এবং শান্তনু ঠাকুর— তাঁদের এই চার প্রার্থীর উপরে এ দিন হামলা হয়েছে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘‘আসল ব্যাপার হল রাজ্যে গণতন্ত্রই আক্রান্ত। কমিশনকে বারবার সে কথা বলছি।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, অশান্তি ও গোলমাল সত্ত্বেও অনেক জায়গায় মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তুলে ভোট দিচ্ছেন।

Lok Sabha Election 2019 Election 2019 Phase 5 Barrackpore Violence Arjun Singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy