খাবার চেখে দেখছেন সিএমওএইচ। —নিজস্ব চিত্র।
কচুর তরকারিতে পোড়া, ধোঁয়াটে গন্ধ। ডালে বেশি নুন। আধ-সেদ্ধ মুরগির মাংস। হঠাৎ-পরিদর্শনে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে গিয়ে এমনই খাবার খেলেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা।
খাবারের পরিমাণও যে কম, তা-ও চোখে পড়েছে শুভাশিসবাবুর। খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার বিশ্বনাথ ঘোষকে ডেকে পাঠান তিনি। ঠিকাদার স্বীকার করেন, রান্না করতে গিয়ে পুড়ে গিয়েছে কচুর তরকারি।
পরে শুভাশিসবাবু জানান, ‘‘ঠিকাদারকে সর্তক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই সঠিক পরিমাণ ও মানের খাবার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’’ না হলে চুক্তি বাতিলের হুমকিও দেন ঠিকাদারকে। বৃহস্পতিবার আলুর দম, ডাল ও ডিমের ঝোল দেওয়া হয়েছে। অনেক দিন পরে কিছুটা ভাল রান্না খেয়ে তৃপ্ত আবাসিকরাও।
স্বাধীনতা দিবসের দিন অনুষ্ঠানে হাসপাতালের এক মহিলা আবাসিক খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ করেন। দুপুরের খাবার চেখে দেখার আর্জিও জানান শুভাশিসবাবুকে। এর পরই আচমকা বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে হাজির হন শুভাশিসবাবু। সুপারের ঘরে বসে তিনি আবাসিকদের জন্য প্রস্তুত দুপুরের খাবার খেতে চান। আনা হয় ডাল ভাত, কচুর তরকারি, মুরগির মাংস। হাসপাতালের সুপার পবিত্রকুমার সরকার বলেন, ‘‘দেখে রেস্তোরাঁর খাবার মনে হচ্ছে।’’ সেই ‘রেস্তোরাঁর’ ওই খাবার মুখে তুলতেই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কোনও মতে বমি চাপেন, বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ওই দিনই সুপার, ডেপুটি সুপার-সহ চিকিৎসকদের একটি কমিটি গড়েছেন শুভাশিসবাবু। তাঁর নির্দেশ, ‘‘প্রতিদিন কমিটির একজন করে নিজে খেয়ে খাবারের মান পরীক্ষা করবেন। তবেই তা পরিবেশন করা হবে।’’
ওই হাসপাতালে রবিবার ও বুধবার দুপুরে থাকে মুরগির মাংস, সোমবার ও শুক্রবার দুপুরে মাছ এবং বাকি তিন দিন দুপুরে ডিম। আবাসিকদের কথায়, ‘‘গত সপ্তাহে খালি কুমড়োর ঘন্ট খেয়েছি!’’ অভিযোগ রয়েছে অন্য সময়ের খাবার নিয়েও।
হাসপাতালে মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করছে ‘অঞ্জলি’ সংস্থা। তার কর্ণধার রত্নাবলী রায় জানান, ‘‘সিএমওএইচের উদ্যোগকে স্বাগত। তবে খাবারের মান দেখার কমিটিতে আবাসিকদেরও প্রতিনিধি থাকলে আরও স্বচ্ছতা থাকত।’’ এতে শুভাশিসবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘খাবার খাবেন আবাসিকরাই। তাঁরা মান ফিরছে না মনে করলে, ফের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy