Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রোগীদের জন্য পোড়া সব্জি, ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যকর্তা

কচুর তরকারিতে পোড়া, ধোঁয়াটে গন্ধ। ডালে বেশি নুন। আধ-সেদ্ধ মুরগির মাংস। হঠাৎ-পরিদর্শনে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে গিয়ে এমনই খাবার খেলেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা।

খাবার চেখে দেখছেন সিএমওএইচ। —নিজস্ব চিত্র।

খাবার চেখে দেখছেন সিএমওএইচ। —নিজস্ব চিত্র।

শুভাশিস সৈয়দ
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১২
Share: Save:

কচুর তরকারিতে পোড়া, ধোঁয়াটে গন্ধ। ডালে বেশি নুন। আধ-সেদ্ধ মুরগির মাংস। হঠাৎ-পরিদর্শনে বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে গিয়ে এমনই খাবার খেলেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা।

খাবারের পরিমাণও যে কম, তা-ও চোখে পড়েছে শুভাশিসবাবুর। খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার বিশ্বনাথ ঘোষকে ডেকে পাঠান তিনি। ঠিকাদার স্বীকার করেন, রান্না করতে গিয়ে পুড়ে গিয়েছে কচুর তরকারি।

পরে শুভাশিসবাবু জানান, ‘‘ঠিকাদারকে সর্তক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই সঠিক পরিমাণ ও মানের খাবার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’’ না হলে চুক্তি বাতিলের হুমকিও দেন ঠিকাদারকে। বৃহস্পতিবার আলুর দম, ডাল ও ডিমের ঝোল দেওয়া হয়েছে। অনেক দিন পরে কিছুটা ভাল রান্না খেয়ে তৃপ্ত আবাসিকরাও।

স্বাধীনতা দিবসের দিন অনুষ্ঠানে হাসপাতালের এক মহিলা আবাসিক খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ করেন। দুপুরের খাবার চেখে দেখার আর্জিও জানান শুভাশিসবাবুকে। এর পরই আচমকা বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে হাজির হন শুভাশিসবাবু। সুপারের ঘরে বসে তিনি আবাসিকদের জন্য প্রস্তুত দুপুরের খাবার খেতে চান। আনা হয় ডাল ভাত, কচুর তরকারি, মুরগির মাংস। হাসপাতালের সুপার পবিত্রকুমার সরকার বলেন, ‘‘দেখে রেস্তোরাঁর খাবার মনে হচ্ছে।’’ সেই ‘রেস্তোরাঁর’ ওই খাবার মুখে তুলতেই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কোনও মতে বমি চাপেন, বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ওই দিনই সুপার, ডেপুটি সুপার-সহ চিকিৎসকদের একটি কমিটি গড়েছেন শুভাশিসবাবু। তাঁর নির্দেশ, ‘‘প্রতিদিন কমিটির একজন করে নিজে খেয়ে খাবারের মান পরীক্ষা করবেন। তবেই তা পরিবেশন করা হবে।’’

ওই হাসপাতালে রবিবার ও বুধবার দুপুরে থাকে মুরগির মাংস, সোমবার ও শুক্রবার দুপুরে মাছ এবং বাকি তিন দিন দুপুরে ডিম। আবাসিকদের কথায়, ‘‘গত সপ্তাহে খালি কুমড়োর ঘন্ট খেয়েছি!’’ অভিযোগ রয়েছে অন্য সময়ের খাবার নিয়েও।

হাসপাতালে মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করছে ‘অঞ্জলি’ সংস্থা। তার কর্ণধার রত্নাবলী রায় জানান, ‘‘সিএমওএইচের উদ্যোগকে স্বাগত। তবে খাবারের মান দেখার কমিটিতে আবাসিকদেরও প্রতিনিধি থাকলে আরও স্বচ্ছতা থাকত।’’ এতে শুভাশিসবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘খাবার খাবেন আবাসিকরাই। তাঁরা মান ফিরছে না মনে করলে, ফের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mental Hospital food baharampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE