‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবির আউটডোর শুটিং চলছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিলিখন— ‘‘বৌদি (বিজয়া রায়) তাড়াহুড়োয় মানিকদার (সত্যজিৎ রায়) ব্যাগে পাজামা দিতে ভুলে গেছেন।...আমার একটা বিশাল বড় বার্মিজ লুঙ্গি ছিল।... বললাম...আপনি পরবেন? মানিকদা সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন।...মধ্যরাতে দেখি ছোটরা যেমন বড়দের ডাকে সেই রকম প্রায় ভয়ে ভয়ে ডাকছেন, সৌমিত্র, তোমার সেই লুঙ্গিটা আছে?’’
প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইদানীং রোজ তোপ দেগে বলছেন, ‘পোশাক’ দেখেই হাঙ্গামাকারীদের চিহ্নিত করা যায়। গেরুয়া শিবির সেই শুনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লুঙ্গি’কে বিঁধে ছড়িয়ে চলেছে লাগাতার বিদ্বেষমূলক প্রচার। জনসভার মঞ্চ থেকে বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ‘লুঙ্গি ডান্স’ চলছে! অথচ দক্ষিণ ভারতে লুঙ্গি বা মুন্ডু যেমন সর্বজনীন, বাঙালি জীবনেও লুঙ্গি কোনও সম্প্রদায়ের একচেটিয়া ছিল না কোনও কালে। ছাপোষা বাঙালি লুঙ্গি পরে সকালের খবরের কাগজে চোখও রেখেছেন, থলি হাতে বাজারেও গিয়েছেন। আম গৃহস্থ থেকে শিল্পী-সাহিত্যিক-রাজনীতিক, লুঙ্গিকে আপন করে নিয়েছেন সকলেই।
সৌমিত্র নিজের বার্মিজ লুঙ্গির কথা লিখেইছেন। প্রয়াত অভিনেতা, বাংলা ছবির অন্যতম ফ্যাশন আইকন বসন্ত চৌধুরীর কনিষ্ঠ পুত্র সঞ্জিত চৌধুরী জানালেন, ‘‘বাবারও বার্মিজ লুঙ্গি ছিল। খাস আরাকান থেকে আনানো। বাড়িতে প্রায়ই পরতেন।’’