ধৃত: পুলিশের গাড়িতে শেখ শামিম। ছবি: তাপস ঘোষ
পুলকার দুর্ঘটনার ছ’দিন পরে তার অন্যতম চালক শেখ শামিম আফরোজ আখতারকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, শেওড়াফুলির বাসিন্দা ওই যুবক গা ঢাকা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির কাছে তিনি পরিচিত এক জনের বাড়িতে আসেন। সূত্র মারফত খবর পেয়ে সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে আটক করে। একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে শুক্রবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শামিম এ দিন নীল রঙের ফুলহাতা গেঞ্জি পরেছিলেন। আদালতে ঢোকার সময় গেঞ্জি দিয়ে মুখ ঢাকার চেষ্টা করেন। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটা আমার ঠিকই। কিন্তু পবিত্র কতটা জোরে চালাচ্ছিল, তা তো আমি দেখিনি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুর্ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯ (বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো), ৩০৮ (অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা), ৩৩৭ (অবহেলার ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালানো) এবং ৩৩৮ (বেপরোয়া গতির জন্য চলন্ত গাড়ি নিয়ে পড়ে যাওয়া) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
ওই গাড়ির মালিকানা নিয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। পুলিশ সূত্রের খবর, কাগজ-কলমে গাড়িটি সিঙ্গুরের বারুইপাড়ার বাসিন্দা জনৈক রোহিত কোলের। তিনি পুলিশকে জানান, গত বছরের মার্চ মাসে গাড়িটি তিনি শামিমকে বিক্রি করে দেন। যদিও তার কোনও কাগজপত্র পুলিশ পায়নি। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘গাড়ির কাগজপত্রে যে ব্যক্তির নাম আছে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে শামিমকে জেরা করা হবে। ওই দুর্ঘটনার সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের মূল ক্ষেত্রটি জানার চেষ্টা করা হবে।’’
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পোলবার সুগন্ধা মোড়ের কাছে কামদেবপুরে চুঁচুড়ার একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের পড়ুয়াবোঝাই পুলকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। তারপর আছড়ে পড়ে উল্টে যায় লাগোয়া একটি নয়ানজুলিতে। তিন খুদে পড়ুয়া গুরুতর জখম হয়। তাদের মধ্যে দু’জন এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকারটি চালাচ্ছিলেন শেওড়াফুলির বাসিন্দা পবিত্র দাস। দুর্ঘটনায় তিনিও জখম হন। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সঙ্গে কথা বলার অনুমতি পুলিশকে এ পর্যন্ত দেননি চিকিৎসকেরা। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, শামিমই অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে চুক্তি করতেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy