Advertisement
E-Paper

অবশেষে গ্রেফতার কৃষ্ণনগরে কলেজছাত্রী খুনে অভিযুক্ত দেশরাজ! উত্তরপ্রদেশ-নেপাল সীমান্ত থেকে পাকড়াও

নদিয়ার কৃষ্ণনগরে কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিককে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ-নেপাল সীমান্তবর্তী একটি এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩২
গত ২৫ অগস্ট নিজের বাড়িতে খুন হন কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিক।

গত ২৫ অগস্ট নিজের বাড়িতে খুন হন কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

নদিয়ার কৃষ্ণনগরে কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিককে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ-নেপাল সীমান্তবর্তী একটি এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয়েছে। ট্রানজিট রিমান্ডে দেশরাজকে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে গুজরাতের জামনগরে গ্রেফতার হয়েছিলেন দেশরাজ সিংহের মামা কুলদীপ সিংহ। এ বার পুলিশের জালে ধরা পড়লেন দেশরাজও।

গত ২৫ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরের বাড়িতে মাথায় তিনটি গুলি করে ঈশিতাকে খুন করা হয়। ওই ঘটনার পরে দেশরাজ উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় পৈতৃক বাড়িতে পালিয়ে যান বলে অনুমান করে পুলিশ। কিন্তু কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার একাধিক দল গত কয়েক দিন ধরে তল্লাশি চালিয়েও ওই যুবককে এত দিন ধরতে পারেনি। অবশেষে প্রধান অভিযুক্তের নাগাল পেল পুলিশ।

দুপুরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপার (এসপি) অমরনাথ কে জানান, রবিবার বিকেলে উত্তরপ্রদেশের নেপাল সীমান্তবর্তী জেলা মহারাজগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয় দেশরাজকে। সোমবারই দেশরাজকে আদালতে হাজির করানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, খুনের কয়েক মাস আগেই রেকি করে গিয়েছিলেন দেশরাজ। ঈশিতাকে খুনের পর ওই কলেজছাত্রীর বাড়িতে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করেছিলেন তিনি। তার পর ঈশিতার মা এবং ছোট ভাই বাড়ি ফেরেন। সেই সময় ঈশিতার মায়ের মাথাতেও দেশরাজ বন্দুক ধরেছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে মা-বোনের সঙ্গে থাকতেন দেশরাজ। বাবা বিএসএফ জওয়ান। অভিযোগ, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি খুন করেন কৃষ্ণনগরের ওই কলেজছাত্রীকে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, দেশরাজের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চাননি ওই তরুণী। কিন্তু দেশরাজ সম্পর্ক রাখতে তরুণীর উপর জোর খাটান। তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমনকি, এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন বলে ভিডিয়ো করে ‘প্রেমিকা’কে পাঠিয়েছিলেন। তাতেও ঈশিতার মন না-গলায় ওই যুবক তাঁকে খুনের ছক কষেন বলে অনুমান। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে পুলিশ।

দেশরাজের মামা কুলদীপকে গ্রেফতার করার পরেই ভাগ্নে সম্পর্ক খোঁজ পাওয়া যাবে বলে মনে করছিলেন তদন্তকারীরা। আদতে তা-ই হল। অভিযোগ, প্রেমিকাকে খুনের পর প্রথমে মামার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের যুবক দেশরাজ। মামা তাঁকে পালাতে সাহায্যও করেন বলে খবর।

উত্তরপ্রদেশের ওই যুবক সম্পর্কে আগেই নানা তথ্য পেয়েছিল পুলিশ। জানা গিয়েছিল, দেশরাজের দুই আত্মীয় দঙ্গল সিংহ ও মঙ্গল সিংহের বিরুদ্ধে খুন-সহ প্রায় ৪০টি অভিযোগ রয়েছে। কয়েক দিন আগেই তাঁরা জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। দেশরাজ তাঁদের কাছেও আশ্রয় নিতে পারেন বলে অনুমান করে পুলিশ। দেশরাজের দাদু (মায়ের বাবা) সরযূপ্রসাদ সিংহ আবার এলাকার দাপুটে ‘মুখিয়া’। তা ছাড়াও গোরক্ষপুরে দেশরাজের এক খুড়তুতো ভাই থাকেন। তাঁর নাম নিতিন প্রতাপ সিংহ। তাঁর সঙ্গে খুনের আগে যোগাযোগ করেছিলেন দেশরাজ। দু’জন মিলে কৃষ্ণনগরের তরুণীকে খুনের পরিকল্পনা করেন কি না, সে নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। দেশরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সমস্ত ধন্দ কাটাতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

(ভ্রম সংশোধন: কৃষ্ণনগরে ছাত্রী খুনের খবরে গত ২৫ এবং ২৬ অগস্ট আমরা লিখেছিলাম মূল অভিযুক্তের নাম দেবরাজ সিংহ এবং তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। এই খবর সর্বৈব ভ্রান্ত ছিল। আদতে অভিযুক্তের নাম দেশরাজ সিংহ। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) পুলিশ তাঁকে ভিন্‌‌রাজ্য থেকে গ্রেফতার করে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে গিয়েছে। আগের কয়েকটি প্রতিবেদনে নিহত ঈশিতা মল্লিকের বাবার নাম লেখা হয়েছিল জয়দেব মল্লিক। সেটিও ভুল। মৃতার বাবার নাম দুলাল মল্লিক। অনিচ্ছাকৃত এই সমস্ত ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও নিঃশর্তে ক্ষমাপ্রার্থী)

Krishnanagar Murder Case arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy