পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায়কে আস্থা প্রমাণ করতে বলে চিঠি দিলেন ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে ফোন করে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার পরেও মহকুমাশাসকের কাছে তাঁর ইস্তফাপত্র যায়নি। বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসক চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, মলয়কে পুরসভার মধ্যে আস্থা প্রমাণ করতে হবে। ১৭ মার্চ, সোমবার বৈঠক ডাকতে হবে তাঁকে। সেখানেই আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে তাঁকে। তা না-করতে পারলে ইস্তফা দিতে হবে মলয়কে। এ প্রসঙ্গে মলয় নিজে জানিয়েছেন, তিনি নির্দিষ্ট দিনে বৈঠক ডাকবেন।
নাগরিক পরিষেবা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে পানিহাটি পুরসভায় মলয়ের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পুরসভার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া, স্থানীয় অমরাবতী মাঠের বড় অংশ আবাসন প্রকল্পের জন্য বিক্রির পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন। প্রায় ৮৫ বিঘার ওই মাঠ অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। দলের কাউন্সিলরেরাই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিধানসভা থেকে মলয়কে ফোন করেন ফিরহাদ। তাঁকে ইস্তফার নির্দেশ দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই মলয়কে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই দিন রাতেই চেতলায় পুরমন্ত্রীর বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন মলয়।
আরও পড়ুন:
ফিরহাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর তাঁর মাধ্যমে মমতাকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন পানিহাটির পুরপ্রধান। চেতলার বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, দলের সর্বোচ্চ নেত্রী যখন চেয়েছেন, তিনি অবশ্যই ইস্তফা দেবেন। যথাসময়ে মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন। কিন্তু তার পরেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও চিঠি পাননি মহকুমাশাসক। তার পরেই মলয়কে পাল্টা চিঠি দিয়ে আস্থা প্রমাণ করতে বলেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মলয় বলেন, ‘‘আমি মহকুমাশাসকের চিঠি পেয়েছি। বৈঠক তো ডাকতেই হবে। নির্দিষ্ট সময়ে বৈঠক ডাকব।’’
পানিহাটি পুরসভার অধীনে মোট ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর মলয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরে চিঠি দিয়েছিলেন ৩২ জন কাউন্সিলর। পুরসভার বেহাল অবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল ওই চিঠিতে। পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষও সেই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছিলেন। কিন্তু মমতা সে বার মলয়ের পদত্যাগ আটকে দেন। বিধায়ক নির্মলকে ডেকে তিনি মলয়কে না-সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে এ বার মমতা নিজেই মলয়ের ইস্তফার পক্ষে। তিনি পদত্যাগ করলে পুরসভার দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।