Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘ঘরের ছেলে’ ধরে পুলিশ, ক্ষুব্ধ মমতা

মঙ্গলবার ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশের সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি একটা জিনিস লক্ষ করেছি, আমাদের ছেলেদের বিরুদ্ধে কেউ এফআইআর করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন।

প্রশাসনিক বৈঠকে ডেবরায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

প্রশাসনিক বৈঠকে ডেবরায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

দেবমাল্য বাগচী
ডেবরা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:২৪
Share: Save:

তিনি মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশমন্ত্রীও বটে। সেই তিনিই প্রশাসনিক বৈঠকে সরাসরি পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে কার্যত রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনলেন। আঙুল তুললেন তাদের ভূমিকা নিয়েও।

মঙ্গলবার ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশের সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি একটা জিনিস লক্ষ করেছি, আমাদের ছেলেদের বিরুদ্ধে কেউ এফআইআর করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। আর অন্য দল যে জোরজুলুম করছে, যা ইচ্ছে তাই করছে তখন কিন্তু তাঁরা খেয়াল করেন না, গ্রেফতার করেন না।”

তৃণমূল যে ‘ঘরের ছেলে’, তা মনে করিয়ে তাঁর মন্তব্য, “তৃণমূলকে এখন ধরতে পারেন, ছুঁতে পারেন, গালাগালি দিতে পারেন, আপনার হাতের পাশেই রয়েছে বলে। তাই বলে ঘরের ছেলেকেও মনে রাখতে হয়।” বিজেপি-কে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “যারা গুন্ডামি, মস্তানি করছে, টাকা ছড়িয়ে অটো টোটোয় যাদের প্রতীক মেদিনীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সে সব না ধরা পড়ে জেলাশাসকের চোখে, না পুলিশের চোখে!”

গত লোকসভা ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করে পদ্ম ফুটেছে। তার পর কখনও কাটমানি, কখনও বালি খাদান নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব বিজেপি। এই আবহে পুলিশের ভূমিকায় তিনি যে ক্ষুব্ধ, তা বুঝিয়ে মমতা বলেন, শাসক দলের ঘা খাওয়ার পিছনে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা কম নয়।

এ দিন প্রথমেই মেদিনীপুরের আইসি-কে ধমকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাটা যেন বিকিয়ে না যায়, তা দেখতে হবে।” ঝাড়গ্রামের আইসি-কে বলেন, “আপনি তো ঝাড়গ্রাম অন্য ভাবে চালাচ্ছেন। আপনাকে পাঠানো হয়েছে এখানে কাজ করার জন্য। আপনি তো অকাজ করছেন!” গোপীবল্লভপুরের আইসি-কে তাঁর বার্তা, ‘‘যখন ছাপ্পা হচ্ছিল তখন তো ওসি আপনিই ছিলেন!” ঘাটাল, কেশপুর, পাঁশকুড়া পূর্ব, পিংলা থানার ওসি-দেরও ধমকেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিনের সভায় পূর্তসচিবকে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পূর্ত দফতরের কাজে কিন্তু গাফিলতি হচ্ছে। মানুষের বেশি ক্ষোভ রাস্তাঘাট নিয়ে।” বালি-খাদান নিয়ে তাঁর ক্ষোভ, “ঝাড়গ্রামের বিএলআরও কারা আছেন বলুন তো? এত অভিযোগ কেন বালি খাদান নিয়ে।” মমতার মতে, “রাজনৈতিক লোকেরা চুরি করলে তারা চোর। আর অন্যরা, যারা কাজের সঙ্গে যুক্ত, তারা যদি চুরি করে!” তাঁর হুঁশিয়ারি, “আমার কাছে নাম ধরে অভিযোগ রয়েছে। আপনাদের অস্বস্তি হবে বলে বলছি না।”

মমতার ক্ষোভের প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘উনি দুঃখে এ সব বলছেন। ভেবেছিলেন দলের কর্মীরা কাজ না করলে পুলিশকে দিয়ে কাজ করাবেন। কিন্তু সেটাও হচ্ছে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE