Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর জয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে মমতা, শুনানি বেলা ১১টায়

নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর কাছে ১৯০০-র কিছু বেশি ব্যবধানে ভোটে হেরে গিয়েছিলেন মমতা। যদিও প্রথমে খবর আসে মমতা ১২০০ ভোটে জিতেছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২১ ২১:৩৬
Share: Save:

নীল বাড়ির লড়াইয়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভার ফল নিয়ে এ বার হাই কোর্টে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণনায় কারচুপি-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে একটি মামলা দায়ের করলেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা। শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে হাই কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।

গত ২ মে ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই মমতা বলেছিলেন, নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে আদালতে যাবেন। কিন্তু কবে যাবেন, সে ব্যাপারে কিছুই জানাননি সে সময়ে। ভোট গণনার দিন টান টান উত্তেজনায় প্রথমে খবর চাউর হয়, ১২০০ ভোটে নন্দীগ্রামে জয়ী হয়েছেন মমতা। তার ঠিক কিছু ক্ষণ পরেই আবার খবর আসে, নন্দীগ্রামে মমতা নয়, জিতেছেন শুভেন্দু। ১৯০০-র কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে তিনি জিতেছেন নন্দীগ্রামে। পরে শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। তখন থেকেই গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এ বার নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে পুর্নগণনার দাবি জানালেন খোদ মমতা।

গণনায় কারচুপির অভিযোগে একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। গণনার সময়ে দু’ঘণ্টার জন্য সার্ভার চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে জোড়াফুল শিবির। এ ছাড়াও মমতা ১২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন প্রকাশ্যে আসার পরও নতুন করে গণনা করে শুভেন্দুকে জয়ী ঘোষণার বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি শাসক দল। শুধু তাই নয়, মোবাইলে একটি মেসেজ দেখিয়ে মমতা সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, ‘‘এক জনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’’

শুভেন্দু কিন্তু ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে মমতাকে লাগাতার আক্রমণ করে এসেছেন। মমতা ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, এ সব বলেও কটাক্ষ করেছেন তাঁকে। জোড়াফুল শিবির শুভেন্দুর পাল্টা নানা কথা বললেও মমতা এ সব নিয়ে তেমন করে মুখ খোলেননি। এ বার তিনি পূর্ব ঘোষণা মতো আদালতে দ্বারস্থই হলেন।

প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “নির্বাচন নিয়ে যদি কারও অভিযোগ থাকে তাহলে একমাত্র উপায় হচ্ছে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক আইন অনুসারে ইলেকশন পিটিশন করা। নিয়ম হচ্ছে ভোট প্রক্রিয়া শেষে দেড় মাসের মধ্যে এই পিটিশন জমা দিতে হয়। হাইকোর্টে এই ধরনের মামলার শুনানি শুরু হলে টানা শুনানি চলে। মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন গণনা নিয়ে তাঁর অভিযোগ আছে। সঙ্গে অন্যান্য অভিযোগ আছে। নিয়ম মেনেই মুখ্যমন্ত্রী দেড় মাসের মধ্যে সেই পিটিশনটি জমা দিয়েছেন। ২ মে ভোটের ফলাফল বেরিয়েছে। ১৭ জুন দেড় মাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী পিটিশন দায়ের করায় শুক্রবার থেকে মামলা শুরু হয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছিলেন সেই প্রতিশ্রুতি মতোই তিনি কাজ করেছেন।”

বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনের কোণের গোপন ব্যথা প্রকাশ হয়েছে আদালতে যাওয়ার ফলে। একটা সময়ে ভারতবর্ষের সবচেয়ে ছোট দলের সাংসদ দেবেগৌড়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তখন সবচেয়ে বড় দল বিরোধী দল ছিল। এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের উৎকর্ষ। এটা মেনে নেওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন, “ভারতীয় গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরেও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। অন্য দিকে, শুভেন্দু জিতেও বিরোধী দলনেতা হয়েছেন। এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম। এটা মেনে নেওয়া উচিত।

বিজেপির আইটি সেলের সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্য টুইটে কটাক্ষ বলেন, ‘হেরেও জনগণের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE