স্নেহাশিস: উত্তরবঙ্গ উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তখন বক্তৃতা দিচ্ছেন। সদ্য উদ্বোধন হয়েছে উত্তরবঙ্গ উৎসবের। মুখ্যমন্ত্রী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার কথা বলতে শুরু করেছেন। সে সময়ে মঞ্চে বসেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অনর্গল কথা বলছিলেন সতীর্থ মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার সঙ্গে। সে দিকে চোখ পড়তেই মমতা বক্তৃতার মধ্যেই বলে ওঠেন, ‘‘রবি শুনছ তো!’’
এরপরে রবীন্দ্রনাথবাবুর অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর উত্তরবঙ্গ উৎসবের আয়োজন করে। রবি যদি কনটিনিউ করে (এই দফতরের মন্ত্রী থাকে) তবে পরের বার ও আয়োজন করবে, না হলে অন্য কেউ করবে।’’ তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘আর যদি পর্যটন দফতর উৎসবের আয়োজন করে, তবে ওরা সে সব পরিকল্পনা করবে।’’
এর পরেই তৃণমূলের অন্দরে আলোড়ন পড়ে। কেউ কেউ জল্পনা শুরু করে দেন, তবে কি রবিবাবু আর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী থাকছেন না? আর যদিও থেকেও যান তবে কি উত্তরবঙ্গ উৎসবের আয়োজনের ভার পর্যটন দফতরের হাতে চলে যেতে পারে? সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের আগের মন্ত্রী গৌতম দেবের সময়ের কাজকর্ম নিয়ে রবিবাবু প্রকাশ্যে কিছু প্রশ্ন তোলেন। সেই সূত্রে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের মতো অনেকেই গৌতমবাবুর আমলে হওয়া কাজের তদন্তেরও দাবি করেছেন। এরপরে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব রবিবাবুকে সতর্ক করে দেন বলে দল সূত্রেই খবর। তার পরে রবিবাবুও সুর পাল্টে ফেলেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যে তৃণমূলের অন্দরে সেই প্রসঙ্গই আবার উস্কে দিয়েছে।
তবে মমতাই পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আপনারা আবার লিখতে যাবেন না যে, মুখ্যমন্ত্রী রবিকে বকুনি দিলেন। আমি মোটেই বকা দিইনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রবি-বাচ্চু কথা বলছিল। এটা বড় বিষয় নয়। ওরা মন্ত্রী, ওঁদেরই তো সব আয়োজন করতে হয়। তাই নানা কথা বলতেই পারে।’’ এটি নিয়ে তৃণমূলের উত্তরের নেতারা প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। তবে আড়ালে কয়েক জন জানান, যা ঘটেছে তাতে কিছুটা হলেও আর এক মন্ত্রীর খুশি হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy