Advertisement
E-Paper

বিল বেশি বা অনিয়ম মানব না, মমতার তোপে সব বেসরকারি হাসপাতাল

সপ্তাহখানেক আগেই হাসপাতালে তাণ্ডবের সাক্ষী হয়েছে কলকাতা। ঘটনার পরই প্রকাশ্যে এর তীব্র নিন্দা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতালগুলির একাংশের বিরুদ্ধে চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচের অভিযোগও রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৩:১১
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সপ্তাহখানেক আগেই হাসপাতালে তাণ্ডবের সাক্ষী হয়েছে কলকাতা। ঘটনার পরই প্রকাশ্যে এর তীব্র নিন্দা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতালগুলির একাংশের বিরুদ্ধে চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচের অভিযোগও রয়েছে। এ সব অভিযোগ নিয়ে বুধবার টাউন হলে একটি বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতাল ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী:

প্রতি মাসে সব হাসপাতালের রিপোর্ট চাই।

চিকিৎসকেরা বেশি কমিশন নেওয়া বন্ধ করুন।

ইমার্জেন্সি কেস প্রত্যাখ্যান করা চলবে না।

বেসরকারি হাসপাতালে নজরদারি চলবে।

আগামী বিধানসভা অভিবেশনে শীঘ্রই এ নিয়ে বিল আনা হবে।

হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা হবে।

রক্ত ঠিক মতো সংরক্ষণ করতে হবে। সংক্রমণ যেন না ছড়ায়।

কাউকে ডেঙ্গি, কাউকে ম্যালেরিয়া বলে দেওয়া হচ্ছে। নজরদারি বাড়াতে হবে।

বৈঠকে জিডি হাসপাতাল, বিএম বিড়লা, রুবি, মেডিকা-সহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা ছিলেন।

• (মেডিকা-র উদ্দেশে) এত টাকা নেন কেন? কিডনি চক্র বন্ধ হয়েছে?

ই-প্রেসক্রিপশন, ই-রেকর্ড সকলকে দিতেই হবে।

সিএমআরআই কর্তৃপক্ষ বলেন:

যে কেউ এসে আমাদের নথি অডিট করে দেখতে পারেন। সোশ্যাল সার্ভিস করি আমরা।

ইমার্জেন্সি এবং ওপিডি-তে আমরা বহু দিন ধরে ফ্রি সার্ভিস দিই।

বিলে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করব। এই বিষয়ে কাজ করার চেষ্টা করব।

সরকারের কাছে সে দিনের ঘটনায় অনেক সমর্থন পেয়েছি।

বিল প্রচন্ড বেশি হচ্ছে। কী সমস্যা?

সিএমআরআই কর্তৃপক্ষ বলতে উঠলেন:

হাসপাতালে যাঁদের কিছু ইনফেকশন রয়েছে সেন্ট্রাল এসি থাকায় তা ছড়িয়ে পড়ছে।

নার্স কোথায় যাবে না যাবে তা কি সরকার দেখবে? ভাল করে মাইনে দিন!

বেলভিউ কর্তৃপক্ষ বলেন:

আমি মানছি, সার্ভিস একটু খারাপ হয়েছে। অনেক নার্স কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছে। এর জন্য মান কমেছে।

মিস্টার ট্যান্ডন, কেন সার্ভিসের মান কমছে? কেন বিল বাড়ছে?

বেলভিউ কর্তৃপক্ষ বলতে উঠলেন

মেশিন কিনেছেন, ভাল কথা, কিন্তু তার জন্য কত দিন বিল বেশি নিতে হয়!

সোনার হাঁসটা তো প্রথম দিনেই কেটে ফেললে হয় না।

অ্যাপোলো হাসপাতালে সিইও রানা দাশগুপ্ত বলেন:

তবে আমরা খরচ কমানোর চেষ্টা করব।

অনেক সময় শেষ মুহূর্তে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে বিল বেড়ে যায়। ক্রিটিক্যাল কেয়ার দিতে হয়।

অনেক সময় ইমার্জেন্সি থাকলে রোগীকে বিনামূল্যেও চিকিৎসা দিয়েছি আমরা।

ইমার্জেন্সি থেকে আমরা কাউকে ফেরত পাঠাই না।

আমাদের অনেক প্রোটোকল থাকায় অনেক সময় হয়তো বিল বেড়ে যায়।

আমরা দামি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করি। সবচেয়ে ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।

আমরা চেষ্টা করব, প্রাথমিক চিকিৎসাটা সকলকে দিতে।

অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। একটা ফাইভ স্টার হোটেলেও এত খরচ হয় না।

অ্যাপোলো হাসপাতালে সিইও রানা দাশগুপ্ত বলতে উঠলেন

নার্সিংহোমেও ফেয়ারপ্রাইস শপ করা উচিত।

পেট খারাপ হলে মাথা থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত টেস্ট করানো হয়।

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় অনেকেই আসতে চাইছেন না। কেন?

জায়গার অভাব থাকলে মেঝেতেও জায়গা করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।

সরকার সাহায্য করলেও গরিবরা সেই সুযোগ পাচ্ছেন না।

প্যাকেজে অস্ত্রোপচার করিয়েও ফের বড় অঙ্কের টাকার বিল ধরানো হচ্ছে।

মানুষ তো চিকিৎসা করার আগেই মরে যাচ্ছেন।

সহমর্মিতার পরিবর্তে মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে। চিকি়ৎসার খরতচ মেটাতে ঘটিবাটি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।

অনেক সময় চিকিৎসকদের বাধ্য করা হচ্ছে, বেশি বিল ধরানোর জন্য।

মৃতদেহ আটকে রাখা হচ্ছে।

এক ওষুধ বার বার দেওয়া হচ্ছে।

অপ্রয়োজনে আইসিইউ, ভেন্টিলেশন করে বিল বাড়ানো হয়েছে।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিলবাড়ানো হয়েছে।

রাজ্যে জীবনযাপনের মান খুব উঁচু নয়। এখানে দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো এখানে চার্জ নেওয়া যায় না।

এর মধ্যে ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

বহু দিন থেকেই অভিযোগ পাচ্ছি। ৯৪২টা নার্সিং হোমে সমীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০টিকে শোকজ করা হয়েছে।

বিল না দেওয়ায় মৃতদেহ আটকে রাখা হচ্ছে।

বেসরকারি হাসপাতালগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী —নিজস্ব চিত্র।

লাভ করুন, তবে তা মাত্রাতিরিক্ত ভাবে নয়। না হলে এটা জল্লাদের জায়গা হয়ে যাবে।

কে কোথায় চিকিৎসা করবে সেটা তাঁর স্বাধীনতা।

জীবন বাঁচানোর জন্য ইন্ডাস্ট্রি এটা। ইট-কাঠ পাথরের নয়।

সেবা বিক্রি হয় না। সেবা দিতে হয়।

দেশের বাইরে থেকেও নেপাল, বাংলাদেশ থেকে অনেকে এখানে চিকিৎসার জন্য আসতেন। কিন্তু, এখন এখানে আসতে চাইছেন না। ভেলোরে চলে যাচ্ছেন।

মাদার-চাইল্ড হাব করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বেড না পেলে অনেকেই বেসরকারি হাসপাতালে যান।

কোথাও কোথাও ভিড় বেশি হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে বিল না মেটানোয় চাপ দেওয়া হচ্ছে।

উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা।

বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকতেই পারে। তবে আইন হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়।

বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিতা গুরুত্বপূর্ণ।

Mamata Banerjee Meeting Private Hospitals
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy