Advertisement
E-Paper

মনে হল দিদি আমাদের উপর একটু রেগে গেলেন, বলছেন সোনালিরা

মুখ্যমন্ত্রীর এই ‘আক্ষেপ’ উত্তর ২৪ পরগনার ভিলেজ রিসোর্স পার্সন (ভিআরপি) বা গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের কারণে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:৫০
বনগাঁর সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। —নিজস্ব চিত্র

বনগাঁর সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। —নিজস্ব চিত্র

বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনেন ওঁরা। সেই তথ্য পৌঁছে দেন সরকারকে। কিন্তু তাঁদেরও হাজারো সমস্যা। সে কথা কাকে বলবেন! হাতের নাগালে মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে জানাতে চেয়েছিলেন তাঁকেই। কিন্তু ভরা সভায় ‘হইচই’ করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝে এ ভাবে দাবি জানানোয় কিছুটা ক্ষুব্ধ হলেন তাঁদের ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে এ-ও বলতে শোনা গেল, ‘‘আপনাদের কয়েক জনের জন্য মনখারাপ হয়ে গেল।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই ‘আক্ষেপ’ উত্তর ২৪ পরগনার ভিলেজ রিসোর্স পার্সন (ভিআরপি) বা গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের কারণে।

উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ছিল বুধবার। সম্বোধন পর্ব শেষে মতুয়া এবং আম জনতার জন্য সরকার কী কী করেছে, তার খতিয়ান তুলে ধরছিলেন মমতা। ক্রমেই চড়ছে সুর। নয়া নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি, আমপান, নয়া কৃষি আইন— একের পর এক তির ছুড়ে চলেছেন বিজেপি তথা কেন্দ্রকে।

আচমকা ছন্দপতন! সভায় উপস্থিত জনতার একটি দলের মধ্যে কোলাহল। ‘দিদি’কে কিছু বলতে চাইছেন তাঁরা। নজর পড়ল মমতারও। থেমে গেল বক্তৃতা। কী চাইছেন জানতে চাইলেন। কিন্তু এত কোলাহলে স্পষ্ট নয়। শেষে এক জনকে উঠে বলতে বললেন। তার পরেও ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না। ঘুরে এলাকার নেতাদের জিজ্ঞেস করলেন। তাঁরাও ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি। এ ভাবে কিছু ক্ষণ চলার পর বোঝা গেল, ভাতা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন ভিআরপি কর্মীরা।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে বুদ্ধদেব, করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ, অবস্থা স্থিতিশীল

তত ক্ষণে মুখ্যমন্ত্রী খানিকটা বিরক্ত। ওই দলের উদ্দেশে বললেন, ‘‘এত লোকের মাঝে একটা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দু’এক জন এই ভাবে সভার কাজে বাধা দেন। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। তাঁদের অসুবিধা করছেন আপানারা।’’ তার পর কিছুটা সামলে নিয়ে বলেন, ‘‘কোনও দাবিদাওয়া থাকলে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে জানান। উপায় থাকলে তার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এ ভাবে সভার কাজ ব্যাহত করবেন না। সভার শেষের দিকে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্ষেপ করে বলতে শোনা যায়, ‘‘কিছু মনে করবেন না, আপনাদের কয়েক জনের জন্য মন খারাপ হয়ে গেল।’’

আরও পড়ুন: উপড়ে ফেলেই ছাড়ব, কলকাতায় এসেই মমতাকে নিশানা নড্ডার

যাঁরা দাবি জানাতে এসেছিলেন, তাঁরা কী বলছেন? মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণকারীদের অন্যতম নাজমা মণ্ডল সভার পরে বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করি। এখন দিদি আমাদের ডেঙ্গুর কাজও দিয়েছেন। আমরা তথ্য দিই সরকারকে। দিন প্রতি ১৭৫ টাকা হিসেবে ২০ দিন কাজ পাই আমরা। এই সামান্য টাকায় আমাদের সংসার চলে না।’’ ভিআরপি কর্মী অর্পিতা বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘বিধানসভা ভোটের সময় দিদি আমাদের কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেগুলো এখনও হয়নি। তাই আজ আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে এসেছিলাম।’’

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি যে তাঁদের আস্থা আছে, সে কথা দৃঢ় ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন সবাই। সোনালি বসুর কথায়, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। দিদি সবার জন্য ভাবেন। আমাদের জন্য যদি একটু ভাবতেন।’’ কিন্তু এ ভাবে সভার মাঝে দাবি জানানোয় হিতে বিপরীত হল না তো? নাজমা বলেন, ‘‘মনে হল দিদি আমাদের উপর একটু রেগে গিয়েছেন।’’

Mamata Banerjee VRP Bangao
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy