—ফাইল চিত্র।
‘নো আইডেন্টিটি কার্ড, নো ভোট’-এই দাবিতে করা আন্দোলনের জেরে একুশে জুলাই মাইলফলক হয়ে রয়েছে তৃণমূলের ইতিহাসে। আড়াই দশক পরে ফের একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সেই ভোট নিয়েই নতুন স্লোগান দিতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এবারের স্লোগান, ‘গণতন্ত্র বাঁচাও, ব্যালট ফেরাও।’ শনিবারই কালীঘাটে প্রথম পর্যালোচনা বৈঠকে ইভিএমের বদলে ব্যালটে ভোট করার দাবি নিয়ে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ঠিক হয়, নির্বাচনের কমিশনের কাছে এই দাবিতে আন্দোলনে নামবে তৃণমূল। সোমবার দলীয় বৈঠকে তাতে চূড়ান্ত ‘সিলমোহর’ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইভিএম চাই না। ব্যালট চাই। দেশের সব দলকে এই আন্দোলনে যুক্ত হতে বলব।’’
কেন ইভিএম বাতিলের দাবি করছেন, এদিন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘‘ভোটের দিন বহু জায়গায় ইভিএম খারাপ হওয়ায় তা বদল করতে হয়েছিল। কিন্তু পরিবর্তিত ইভিএমের দুই শতাংশেরই ‘মক পোল’ হয়নি।’’ কোন বিধানসভা এলাকায় কত ইভিএম বদল হয়েছে, বিধায়কদের ১৫ দিনের মধ্যে তার হিসাব দিতে বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কয়েক লক্ষ মেশিন কেন খুঁজে পাওয়া যায়নি? সেগুলো কি বদল করা হয়েছিল? আমরা ইভিএমের এই ভোট মানুষের রায় বলে মনি না।’’ দলীয় বৈঠকেও একই কথা বলেছেন মমতা। আগেও ইভিএম বাতিলের দাবি তুললেও এবার দলকে পূর্ণশক্তিতে আন্দোলনে নামাতে চাইছেন মমতা।
এদিন দলের মন্ত্রী, সাংসদ ও নবান্ন সভাঘরে বিধায়কদের সঙ্গে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমে আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘আমেরিকার মতো দেশও ইভিএম বাতিল করে দিয়েছে। আমি সন্দেহ করি কারণ মাত্র দুই শতাংশ গুণতে দিয়েছে। ৯৮ শতাংশে প্রোগ্রামিং করা নেই, কী ভাবে প্রমাণিত হবে? নির্বাচন কমিশনের দেখা উচিত ছিল। কিন্তু তারা দেখেনি। সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলাম। খারিজ করে দিয়েছে। বিচারের জায়গাগুলিতে বিচার পাইনি।’’
দলের হার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘এটা সাময়িক ভাবে ভোট সরে গেছে।। একক শক্তিতে লড়াই করেও ১৬৪টি বিধানসভা আসনে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ভোট ৪ শতাংশ বেড়েছে।’’ দলকে চাঙ্গা রাখতে তিনি বলেন, ‘‘এটা ( ফলাফল) সাময়িক। মানি, মাসল, গভর্নমেন্ট, কমিউনাল, কাদা ছোঁড়াছুড়ি দিয়ে এই পল হয়েছে।’’
আগে শাসক দলের সাংসদদের নিয়ে বৈঠক বা অন্য দল থেকে মৌসম বেনজির নূরের মতো কোনও নেতা-নেত্রীর তৃণমূলে যোগদানের ঘটনা ঘটেছে নবান্নে। দলীয় বিধায়কদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন সভাঘরে বৈঠক করায় প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য প্রশাসনের সদর কার্যালয় তৃণমূলের রাজনৈতিক দফতরে পরিণত হয়েছে! শাসক দলের রাজনৈতিক বৈঠক, তার পরের সাংবাদিক সম্মেলন, সবই নবান্নে হচ্ছে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ঠিক একই কাজ করছে বিজেপি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy