Advertisement
E-Paper

বেআইনি খাদান বৈধ করার প্রস্তাব মমতার

অবৈধ কয়লা খাদানগুলিকে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে বৈধ করে দেওয়া হোক। তা হলেই কাজ পেয়ে যাবেন অনেকে—রাজ্যের খনি-শিল্পাঞ্চলে ভোট-প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাব ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৯
কুলটিতে মমতা। — নিজস্ব চিত্র

কুলটিতে মমতা। — নিজস্ব চিত্র

অবৈধ কয়লা খাদানগুলিকে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে বৈধ করে দেওয়া হোক। তা হলেই কাজ পেয়ে যাবেন অনেকে—রাজ্যের খনি-শিল্পাঞ্চলে ভোট-প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাব ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

অবৈধ খাদানকে বৈধ করায় সম্ভাব্য ঝুঁকি কোন যুক্তিতে খারিজ করা হল, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য থেকে তা বুঝতে পারছেন না কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের অনেক কর্তা। আর বিরোধীরা বলছেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলে কর্মসংস্থানের ঘাটতি ঢাকতে ভোটের মুখে অলীক মন্তব্য করা হচ্ছে। এ সবই গিমিক।’’ বারাবনি, কুলটি এবং জামুড়িয়ার প্রচারসভায় বুধবার মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি কয়লামন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছি, এলাকার অবৈধ খাদানগুলি আইনি করা হোক। অনেক বেকার যুবক কাজ পাবেন।’’ যা শুনে চিন্তিত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের অনেক কর্তা। তাঁদের কথায়, ‘‘কোথায় কয়লা খনন করা যাবে, তা ঠিক করে ডিরেক্টর জেনারেল অব মাইনস সেফটি (ডিজিএমএস) বিভাগ। এ ভাবে খনি বৈধকরণের প্রস্তাব ভয়ঙ্কর!’’

বিশেষজ্ঞেরাও জানাচ্ছেন, অবৈধ খাদানে নিরাপত্তা-বিধির পরোয়া না করে কয়লা কাটে চোরেরা, তাতে লাগোয়া জনপদের বিপদ বাড়ে। ধস নামে, বাড়িতে ফাটল ধরে, মাটি ফুঁড়ে আগুন ওঠে। তাই এই ধরনের খাদান বৈধ করা অসম্ভব। রানিগঞ্জ, কুলটি, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বরের মতো খনি এলাকার বাসিন্দাদের বরাবরের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মদতে মূলত শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই কয়লা পাচার নিয়ন্ত্রণ করেন। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বেআইনি কয়লার কারবার বন্ধের একটা চেষ্টা হয়েছিল। তৃণমূল সূত্রের দাবি, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ধারণা ছিল, এলাকার কয়লা-মাফিয়ারা বামেদের ঘনিষ্ঠ। তাই হয়েছিল কড়াকড়ি। পরে মাফিয়ারা নিজেদের প্রয়োজনে শাসক দলের একাংশের সঙ্গে ভিড়েছে। যারা ভেড়েনি, তারা গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে। কয়লা কারবারের চাকাও ফের ঘুরতে
শুরু করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল জমানায় বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বেশ কিছু বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার যারা নিরাপত্তা বিধির তোয়াক্কা না করে একের পরে এক খোলা মুখ খনি কেটে কয়লা তুলছে। আর তাদের দেওয়া ‘প্রণামী’ নিয়মিত পৌঁছচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন ও তৃণমূলের একাংশের কাছে। আর যখন চাই, এই কয়লা-মাফিয়াদের থেকে বাহুবলের সাহায্য পাচ্ছে শাসক দল। তবে সেই অনুপাতে এই কারবারে জড়িত নিচুতলার লোকজনের হাল ফেরেনি। তৈরি হয়নি বিকল্প নতুন কাজ। দুর্নীতির দরুন সমস্যা রয়েছে ১০০ দিনের প্রকল্পে টাকা পাওয়া নিয়েও।

এলাকার সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীও জানেন, এই এলাকায় কর্মসংস্থান হয়নি। তাই পিঠ বাঁচাতে ও সব বলেছেন। শিল্পাঞ্চলে কয়লার কারবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে তৃণমূল। অবৈধ খাদান বৈধ হলে ওঁদের সে সব নেতার কী হবে!’’ যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব কয়লা কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

Mamata Pits Legalize Illegal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy