Advertisement
E-Paper

নিজেরই শ্রাদ্ধে হাজির করোনায় ‘মৃত’, বিরাটিতে উচ্ছ্বাস, খড়দহে কান্নার রোল

রবিবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তারই প্রস্তুতি চলছিল বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে। সারা হয়েছিল নিমন্ত্রণও। কিন্তু শুক্রবার ফের ‘অঘটন’-এর মুখোমুখি হলেন শিবনাথের আত্মীয়রা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ২৩:২৫
শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডান দিকে হাসপাতাল থেকে দেওয়া ডিসচার্জ সার্টিফিকেট। নিজস্ব চিত্র

শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডান দিকে হাসপাতাল থেকে দেওয়া ডিসচার্জ সার্টিফিকেট। নিজস্ব চিত্র

বাস্তব যে গল্পের থেকেও বেশি আশ্চর্যজনক হতে পারে, শনিবার হাতেনাতে তারই প্রমাণ পেল বিরাটির বন্দ্যোপাধ্যায় এবং খড়দহের মুখোপাধ্যায় পরিবার।

কয়েক দিন আগেই কান্নার রোল উঠেছিল বিরাটির বিদ্যাসাগর সরণির বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে। গত ১১ নভেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়ে বারাসতের বলরাম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পরিবারের কর্তা শিবনাথ। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, ভর্তি হওয়ার দিন দু’য়েকের মাথায় হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয়, শিবনাথ মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে শিবনাথের ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ও দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ‘দেহ’-ও সিল করে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। শ্মশানে দাহ করা হয় সেই ‘দেহ’।

রবিবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তারই প্রস্তুতি চলছিল বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে। সারা হয়েছিল নিমন্ত্রণও। কিন্তু শুক্রবার ফের ‘অঘটন’-এর মুখোমুখি হলেন শিবনাথের আত্মীয়রা। তাঁদের বক্তব্য, ওই হাসপাতাল থেকে ফের ফোন করে বলা হয়, ‘‘আপনাদের রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বাড়ি নিয়ে যান।’’ এই খবরে কার্যত আকাশ থেকে পড়েন সকলেই। হাসপাতালে গিয়ে চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন হয়। শোকের পরিবেশ মুহূর্তেই বদলে যায় উচ্ছ্বাসে। দেখা যায় সত্যিই শিবনাথ জীবিত, বহাল তবিয়তে। অ্যাম্বুল্যান্সে চড়ে বাড়ি ফিরেছেন সুস্থ শিবনাথ। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই উৎফুল্ল শিবনাথের আত্মীয় পরিজনরা। কিন্তু প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে— দিন কয়েক আগে শ্মশানে কার দেহ দাহ করা হল?

আরও পড়ুন: নিহত কালাচাঁদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের

আরও পড়ুন: কাজের ‘স্বাধীনতা’ চান ক্ষুব্ধ শুভেন্দু, আগামী সপ্তাহে ফের আলোচনায় সৌগত

করোনায় মৃত্যু হওয়ায় শিবনাথের পরিবারের কেউই সিল খুলে মৃতদেহ দেখেননি। ‘রহস্য’ লুকিয়ে সেখানেই। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহিনীমোহন মুখোপাধ্যায় নামে খড়দহের এক বাসিন্দা কোভিড আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ওই হাসপাতালেই। হাসপাতাল সূত্রের খবর, করোনায় মোহনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, মোহিনীমোহনকে হাসপাতালে আনার সময় নথিতে নাম বদলে শিবনাথ হয়ে গিয়েছিল। তাতেই না কি এই বিপত্তি। যে প্যাকেটে মৃতদেহ দেওয়া হয়েছিল তার ফেস কভার স্বচ্ছ থাকলেও শিবনাথের পরিবার তা লক্ষ করেননি বলেও দাবি হাসপাতালের।

এক দিকে যখন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে উচ্ছ্বাসের ছবি, তখন শোকে পাথর খড়দহের মুখোপাধ্যায় পরিবার। মৃত মোহিনীমোহনের ছেলে সন্দীপ মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য প্রশ্ন, ‘‘হাসপাতালে আধার কার্ড জমা দেওয়া সত্ত্বেও এমন ভুল হল কী করে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘চিকিৎসকরা ফোন করেও বলতেন বাবা ভাল রয়েছে। গত কাল ফোন করে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু গিয়ে যা দেখি তাতে চমকে উঠি। অথচ এর বিন্দুবিসর্গও আমরা টের পাইনি। আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে।’’ হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের যে গাফিলতি রয়েছে তা মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে উদোর পিণ্ডি গিয়ে চেপেছে বুধোর ঘাড়ে।

Covid 19 Coronavirus Covid Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy