জেল থেকে ছাড়া পাওয়া বিধায়কেরা কি কারাবাসের সময়ের বেতন তুলতে পারবেন? মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার শুনানিতে উঠে এল সেই প্রশ্ন। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের কাছে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, মানিক ভট্টাচার্য জেলে থাকাকালীন সময়ের বেতন পাওয়ার যোগ্য কি না। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, তাতে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তিনি কারাবাসের সময়ের বেতন পাওয়ার যোগ্য নন। ঘটনাচক্রে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও ১৪ মাস জেলে কাটিয়ে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে বিধানসভা সূত্রে খবর, বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি এখনও কোনও আবেদন করেননি।
বিধায়কদের বেতনের মূলত দু’টি অংশ থাকে। একটি মূল বেতন। অন্যটি ভাতা। ভাতা নির্ভর করে বিধানসভার বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগদান-সহ আরও অন্য বিষয়ের উপরে। জেলে থাকাকালীন বেতনের থেকে ভাতার অঙ্ক বাদ গেলেও মূল বেতন প্রতি মাসেই পৌঁছে গিয়েছে বিধায়কদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কারণ, তাঁরা কেউই ওই পদ থেকে ইস্তফা দেননি। নিয়ম অনুসারে, গ্রেফতারির পরে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ় হয়ে যায়। ফলে অ্যাকাউন্টে বেতন এলেও, ওই সময়ের প্রাপ্ত টাকা গ্রেফতার হওয়া বিধায়কেরা ব্যবহার করতে পারছেন না।
সূত্রের খবর, জেলে থাকাকালীন ওই বেতনের টাকা পেতে বিধানসভায় আবেদন করেন মানিক। সূত্রের খবর, জামিনে মুক্তি পাওয়া বিধায়ক মানিক কারাবাসের সময়ের বেতন পাবেন কি না, সে বিষয়ে মঙ্গলবার দীর্ঘ ক্ষণ শুনানি চলেছে বিধানসভায়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মানিক আত্মপক্ষ সমর্থনে শীর্ষ আদালতের বিভিন্ন রায়ের অংশ তুলেও ধরে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে। তাতে এখনও রায় দেননি বিধানসভার অধ্যক্ষ।
আরও পড়ুন:
অপর দিকে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার জ্যোতিপ্রিয় ইতিমধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চালু করার অনুমতি পেয়েছেন। অধিবেশনে যোগ দেওয়ারও অনুমতি মিলেছে তাঁর। বিধানসভা সূত্রে খবর, জ্যোতিপ্রির ক্ষেত্রেও জেলে থাকাকালীন সময়ে বিধানসভার বেতন নিয়ে একই ধরনের জটিলতা রয়েছে। তবে ওই সময়ের বেতন নিয়ে তিনি এখনও পর্যন্ত কোনও আবেদন জানাননি বিধানসভায়। অধ্যক্ষও এখনও পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়ের কারাবাসের সময়ের বেতনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বলে খবর। রাজ্যের অপর এক প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বর্তমানে জেলবন্দি। তাঁরও বিধানসভার বেতনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ় হয়ে রয়েছে। ফলে জামিনের পর তাঁকেও কাঠখড় পোড়াতে হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।