দক্ষিণ দিনাজপুরের এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কয়লার উনুনে রান্না করতে গিয়ে সোমবারই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক কর্মীর। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের দিনই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বড় রদবদল আনল রাজ্য। মঙ্গলবার রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, এখন থেকে রাজ্যের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কয়লার উনুনের পরিবর্তে এলপিজি সিলিন্ডারে রান্না করা হবে।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার শশী বলেন, ‘‘এর আগে কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর এ ভাবে মৃত্যু হয়নি। এই ঘটনায় আমরা শোকাহত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। এ ছাড়াও বিমা এবং আরও সব রকমের আর্থিক সুবিধা পাবেন মৃতের পরিজনেরা।’’ মন্ত্রীই জানাচ্ছেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে এত দিন কাঠকয়লার উনুনে রান্না হত। যদিও ওই ব্যবস্থা বদলে গ্যাস সিলিন্ডারে রান্নার অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। এখন থেকে প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সিলিন্ডার-সহ গ্যাস ভেন এবং স্টোভ সরবরাহ করা হবে। এ জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ২৮১ কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। প্রথম দফায় ইতিমধ্যেই ৮১ হাজারেরও বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এলপিজি সিলিন্ডারের খরচ বাবদ মোট ৩৭.৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শশী। প্রতিটি কেন্দ্রপিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৪,৬৫০ টাকা। এ ছাড়া, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করার দিকেও নজর দেবে রাজ্য। শশী জানাচ্ছেন, সব মিলিয়ে মোট খরচ গিয়ে দাঁড়াবে ২৮৬ কোটি টাকায়।
সোমবারই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট গ্রামীণ প্রকল্পের এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর। অভিযোগ, রান্না করার সময় কোনও ভাবে অসাবধানতাবশত তাঁর কাপড়ে আগুন লেগে যায়। শশীর কথায়, ‘‘গত প্রায় ১৮ বছর ধরে ওই মহিলা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবে কাজ করছিলেন। তবে নানা আইনি জটিলতার জন্য গত কয়েক মাস ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে ওই কেন্দ্রে দ্বিতীয় কোনও সহায়িকা ছিলেন না। সব কাজ একাই করতেন ওই কর্মী।’’ দুর্ঘটনার সময়েও ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কেউ ছিলেন না। মহিলার চিৎকার শুনে স্থানীয়েরা ছুটে আসেন। তত ক্ষণে প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে তাঁর দেহ। তড়িঘড়ি ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।