মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। যা ঘিরে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে হইচই পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এমন আবহে মানিক কোথায় রয়েছেন, তা জানতে মঙ্গলবার দুপুরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ইডি) ইমেল করলেন বিধায়ক-পত্নী। মঙ্গলবারই মানিককে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
মানিকের স্ত্রীর ইমেল করার বিষয়টি ব্যাঙ্কশাল আদালতে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। মানিকের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, গ্রেফতার করা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। যদিও ইতিমধ্যেই আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে যে, গ্রেফতারের পর ‘অ্যারেস্ট মেমো’র জন্য মানিকের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এ জন্য ফোন করা হয়। সে প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে মানিকের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।
তদন্তে মানিক অসহযোগিতা করছেন বলে দাবি করেছে ইডি। যদিও এই দাবি মানতে চাননি মানিকের আইনজীবী। তাঁর পাল্টা দাবি, তদন্তে সহযোগিতা করছেন তাঁর মক্কেল।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে আগে থেকেই তদন্তকারী সংস্থার নজরে ছিলেন মানিক। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মানিককে ডেকে পাঠান ইডি আধিকারিকরা। ইডির তরফে মানিককে যে সময়ে তলব করা হয়েছিল, তার বেশ কিছু সময় পরে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন তিনি। এর পর রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ চলে। মানিককে রাত থেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পর বয়ানে অসঙ্গতি এবং জেরায় অসহযোগিতার অভিযোগে ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয় পলাশিপাড়ার বিধায়ককে।
মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয় মানিককে। আদালত চত্বরে ঢোকার সময় সাধারণ জনতার রোষের মুখে পড়তে হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে। তাঁকে ঘিরে ‘চোর, চোর’ রব ওঠে আদালত চত্বর জুড়ে। হাতে জুতোও তুলে নেয় উন্মত্ত জনতা।
আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে যে, মানিক-পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের ছেলের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে। ইডির দাবি, মানিক-পুত্র শৌভিকের নামে একটি কনসালটেন্সি ফার্ম রয়েছে। ৫৩০টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (যারা বি.ইডি, ডি.ইএল.ইডি-র মতো কোর্স করায়) ৫০ হাজার টাকা করে অর্থ দিয়েছে ওই সংস্থায়। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এ ক্ষেত্রে অর্থ তছরুপ হয়েছে। যদিও মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত দাবি করেছেন, এটা অর্থ তছরুপের বিষয় নয়। এ সংক্রান্ত তথ্য ইডিকে দেওয়া হয়েছে। আয়কর রিটার্ন দাখিলও করা হয়েছিল। এই প্রেক্ষিতে মানিকের স্ত্রীর ইমেল এই পর্বে নয়া মাত্রা যোগ করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy