ভেঙে পড়েছে মহিষাদলের ‘সিংহদুয়ার’ ভবন। —নিজস্ব চিত্র।
হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মহিষাদল রাজবাড়ি চত্বরে থাকা ১২৫ বছরের পুরনো একটি ভবন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ওই ভবনটি পরিচিত ‘সিংহদুয়ার’ নামে। তবে মহিষাদল রাজবাড়ির মূল অংশের সঙ্গে এই ভবনের কোনও সংযোগ ছিল না। বৃহস্পতিবার বেলার দিকে আচমকাই তা ভেঙে পড়ে। আঠেরশো শতাব্দীর শেষ লগ্নে তৈরি হওয়া এই ভবনটি ছিল ওয়েস্টবেঙ্গল হেরিটেজ কমিটির তত্ত্বাবধানে। ফলে ভবনটি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও।
মহিষাদল রাজবাড়িতে থাকা ‘সিংহদুয়ার’ ভবনটিতে ক্ষয় রোগ বাসা বেঁধেছিল আগেই। এর আগে গত শনিবার ওই ভবনটির পাশের একটি অংশ প্রথমে ভেঙে পড়ে। বৃহস্পতিবার ফের ভেঙে পড়ল ওই ভবনটির একটি বড় অংশ। ওই ভবনে প্রবেশের জন্য সুবিশাল সিঁড়ি। সিঁড়ির দু’পাশে দু’টি সিংহের মূর্তি। যে কারণে ওই বাড়িকে ‘সিংহদুয়ার’ নামেই চিনতেন সকলে। ২০১৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ওই বাড়িটি ছিল ওয়েস্টবেঙ্গল হেরিটেজ কমিটির তত্ত্বাবধানে। তার ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রায় ধ্বংস হয়ে গেল ঐতিহাসিক ওই ভবনটি।
খবর পেয়ে স্থানীয় বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী যান এলাকায়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকেরই অভিযোগ, হেরিটেজ কমিটি ওই ভবনটি হাতে নেওয়ার পর থেকে শুধুমাত্র লোহার পাইপ দিয়ে সেটিকে মুড়ে ফেলা ছাড়া আর কোনও মেরামতি হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মনোজিৎ দাস বলেন, ‘‘এই বাড়িকে ঘিরে বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বেড়াতে এসে এই বাড়ির সামনের সিঁড়ি এবং সিংহের মূর্তির উপর বসে ছবি তোলা ছিল পর্যটকদের বিশেষ পছন্দের। কিন্তু শুধুমাত্র প্রশাসনের অবহেলায় এই ঐতিহাসিক সম্পদটি আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হল।’’ রাজবাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পৌঁছয় জেলা প্রশাসনের কাছেও। যদিও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পটাশপুর, ভগবানপুর, এগরা, চণ্ডীপুর ইত্যাদি এলাকা জলমগ্ন থাকায় সেদিকেই ব্যস্ত প্রশাসনিক কর্তারা।
ওয়েস্টবেঙ্গল হেরিটিজ কমিটির দেওয়া বিবরণে জানানো হয়েছে, ১৮৯৬ সালে এই বাড়িটি নির্মিত হয়েছিল। মহিষাদল রাজবাড়ির মূল অংশের সঙ্গে এই ভবনের কোনও সংযোগ না থাকলেও ভবনটির নির্মাণ কাজও ছিল যথেষ্ট নজরকাড়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy