সন্দেশখালিতে মহিলা নির্যাতনের অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই আবহে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামেও মহিলা নির্যাতনের অভিযোগ উঠল। নির্যাতিতার দাবি, অভিযুক্তেরা তাঁকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে সন্দেশখালির মতো কাণ্ড ঘটানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
ঘটনাটি নন্দীগ্রাম-২ ব্লক এলাকার। ওই ব্লকের একটি গ্রামের মহিলা বাসিন্দা জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল পারিবারিক বিবাদ থেকে। সেই বিবাদ সমাধান হয়ে যাওয়ার পরেও সালিশি সভার নাম করে গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর তাঁদের থেকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা এবং জিনিসপত্র লুট করে। অভিযোগ, টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য শর্ত আরোপ করা হয় মহিলাকে স্বেচ্ছায় সহবাস করতে হবে। আর তাতে রাজি না হলে সন্দেশখালির মতো ধর্ষণ এবং প্রাণের মারার হুমকি দেওয়া হয় বলে দাবি। মহিলার দাবি, তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। গ্রামেরই সাত জনের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গৃহবধূ। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে মহিলাকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
সন্দেশখালিতে যখন মহিলা নির্যাতনের ঘটনা শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নন্দীগ্রামের ঘটনাতেও তখন লাগছে রাজনীতির রং। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিযুক্তরা বিজেপি কর্মী। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি সুনীলবরণ জানা বলেন, ‘‘ওই দম্পতি পারিবারিক সমস্যা থানায় বসে মিটে গিয়েছিল। পরে এলাকার বিজেপির কয়েকজন মাতব্বর এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। আতঙ্কে দম্পতি নন্দীগ্রাম ছাড়া। প্রশাসনকে বলেছি দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হোক।’’
উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামের ১৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০টিই জিতেছে বিজেপি। লোকসভা সভা ভোটে তাদের হারাতে মরিয়া তৃণমূল। তবে তৃণমূলের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা (তমলুক) সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘এটি পারিবারিক বিবাদ। শুনেছি গ্রাম্য কমিটি এরকম আচরণ করেছে। আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দোষীরা শাস্তি পাক। তবে এর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক নেই।’’ এ ব্যাপারে হলদিয়ার এসডিপিও অরিন্দম অধিকারী বলেন, ‘‘মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
এদিকে, নন্দীগ্রামে যখন মহিলা নির্যাতনের এমন অভিযোগ উঠছে, সেই সময় বুধবারইসেখানে আসেন তৃণমূলের রাজ্যে সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকা মেটানোর বিষয়ে তেখালিতে তৃণমূল যে সহায়তা শিবির করছে, সেখানে বিজেপি হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এ দিন সেখানেরশিবিরেউপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন কুণাল। ওই শিবিরে ছিলেন গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য নিবেদিতা ভূঁইয়া এবং নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। পরে তাঁরা নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল অফিস থেকে থানা মোড় পর্যন্ত মৌনী মিছিল করেন। থানার সামনে বিক্ষোভে সামিল হন কুণাল। পরেতিনি বলেন, ‘‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে হেরেছে। সেই জন্য ১০০ দিনের টাকা দিচ্ছে না। যে টাকা কেন্দ্রের দেওয়ার কথা ছিল, সেই টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবেন। বিজেপি নারী বিদ্বেষী ও চোরের দল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy