ঝোপের ধারে পড়েছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক মধ্যবয়স্কার রক্তাক্ত দেহ। প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশ অনুমান করেছিল, কুপিয়ে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু অভিযুক্ত কে?
মৃতদেহ শনাক্ত করতে গিয়ে দিল্লি পুলিশের চোখ যায় মহিলার ডান হাতের ট্যাটুতে। একটি নাম লেখা। অনুমান, সেটা পুরুষেরই। তা ছাড়া দেহের কাছে পড়েছিল একজোড়া সাদা রঙের চপ্পল। সূত্র বলতে এই দুটোই। তার উপর ভিত্তি করে প্রায় ১১০০ কিমি পাড়ি। সুদূর গুজরাত থেকে ধর্ষক এবং খুনিকে পাকড়াও করল দিল্লি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৬ নভেম্বর দিল্লির আদর্শ নগর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ঝোপের মধ্যে এক মহিলার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। তারা দেখে মহিলার পরনের পোশাক ছেঁড়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে বেশ গভীর ক্ষত। দেহের কাছে পড়েছিল একটি ধারালো অস্ত্র এবং দুই জোড়া চপ্পল। একজোড়া মহিলার, অন্যটি পুরুষের।
খুন এবং ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। স্টেশন চত্বর থেকে গোটা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। অবশেষে একটি ফুটেজে দেখা যায় নির্যাতিতা এবং খুনিকে। দেখা যায়, ৫২ বছর বয়সি মহিলা স্টেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কয়েক সেকেন্ড পরেই এক যুবককে একই দিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। তাঁর পরনে ছিল একই চপ্পল যা দেহের পাশে পাওয়া গিয়েছিল।
ফুটেজে দেখা যায়, ওই লোকটি ঘটনাস্থল থেকেও ফিরে আসছেন এবং খালি পায়ে। ব্যাস, ওইটুকু দেখেই ২৩ বছরের সলমান ওরফে বোনাকে শনাক্ত করে ফেলে পুলিশ। ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দুটি বড় ডাকাতি, অপহরণ এবং এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। মামলার বিচার চলছিল গুজরাতে। কিন্তু অভিযুক্ত হাজিরা দেননি। মৃতার হাতে তাঁর নামেরই ট্যাটু ছিল।
আরও পড়ুন:
ক্রমাগত নজরদারি এবং গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত গুজরাতের ভারুচ জেলার একটি ইটভাটায় লুকিয়ে আছেন। যে স্থান থেকে মহিলার মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেখান থেকে ১,১০০ কিলোমিটার দূরে!
শুক্রবার সেখান থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর সলমালন স্বীকার করেছেন যে, তিনি প্রথমে মহিলার উপর আক্রমণ করেন। তার পর তাঁকে ধর্ষণ এবং হত্যা করেছেন। কেন এই কাণ্ড ঘটালেন, মৃতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ইত্যাদি জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।