নিজস্ব চিত্র
বীরভূমের বগটুই-কাণ্ডের ছায়া পূর্ব মেদিনীপুরে। জমি দখল করে ক্লাব বানাতে বাধা দেওয়ায় রাতের অন্ধকারে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার রাতে নন্দীগ্রামের উত্তর কেন্দেমারি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, ওই সময় ঘরে ছিলেন গৃহকর্তার দুই মেয়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাঁদের। অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে খুনের চেষ্টার এই অভিযোগে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর কেন্দেমারি গ্রামের বাসিন্দা ভীমচরণ দাসের একটি ৩ ডেসিমল জমিকে কেন্দ্র করে মাস কয়েক আগে বিবাদের সূত্রপাত। গ্রামের মন্দির সংলগ্ন হওয়ায় জমিটি মন্দির নির্মাণে দান করতে চেয়েছিলেন ভীমচরণ। কিন্তু বাধ সাধেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানান, ভীমচরণের জমিতে ওই যুবকেরা ক্লাবঘর বানাতে চাওয়ায় ঝামেলা বাধে। গত রবিবার চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ভিন্ রাজ্যে গিয়েছেন ভীমচরণ। বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন দুই বিবাহিত মেয়েকে। এই সুযোগেই ওই যুবকেরা তাঁর বাড়িতে আগুন লাগায় বলে অভিযোগ।
ভীমচরণের পরিবারের দাবি, রবিবার বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় যুবকেরা। ওই ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে এসে দুই যুবককে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সোমবার ধৃতদের হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেন বিচারক। এর পরেই মঙ্গলবার রাতে চার দিক দিয়ে ঘিরে কেরোসিন তেল ছিটিয়ে বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ ভীমচরণের দুই মেয়ের। ওই সময় প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার শুরু করেন তাঁরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ ও ব্লক আধিকারিকেরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। মেয়েদের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে গ্রামবাসীদের একাংশও জড়িয়ে। বাড়িতে যাঁরা হামলা চালাতে এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বহু মহিলাও।
ভীমচরণের মেয়ে নীলিমা মণ্ডল বলেন, “মঙ্গলবার বিকেলে অনেকে মিলে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তাদের মধ্যে জনা চল্লিশেক মহিলা ছিলেন। এর পর রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বাড়িতে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগিয়ে আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।’’
এই ঘটনার পরেই তদন্তে নামে পুলিশ। বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁদের তিন দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy