Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্ষোভে নির্দল স্ত্রী, পাশে তৃণমূল স্বামী

তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক ছিল, জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’বারের প্রধান প্রতিমা নায়েককে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে প্রার্থী করা হবে। তবে শেষ মুহূর্তে বদল হয় সিদ্ধান্ত।

প্রতিমা নায়েক। নিজস্ব চিত্র

প্রতিমা নায়েক। নিজস্ব চিত্র

গোপাল পাত্র
এগরা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৮ ১৩:০৯
Share: Save:

দেহে বাসা বেঁধেছে কর্কট রোগ। মনে জমেছে অভিমান।

তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক ছিল, জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’বারের প্রধান প্রতিমা নায়েককে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে প্রার্থী করা হবে। তবে শেষ মুহূর্তে বদল হয় সিদ্ধান্ত। অভিযোগ, রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে সুস্থ হলেও শারীরিক অসুস্থতার কথা ‘প্রচার’ করে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এতেই জমেছে অভিমান। পঞ্চায়েত সমিতির ওই আসনেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রতিমা।

হতাশায় দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে, তৃণমূল বহিষ্কার করেছে প্রতিমাকে। তাঁর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের আসনে দল টিকিট দিয়েছে প্রতিমার স্বামী বিমলকে। নিজের প্রচার শেষ হলে স্ত্রীর জন্য দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিমার দাবি, প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুৎসা করছেন না তিনি। আগের কাজের উদাহরণ সামনে রেখে মানুষের আশীর্বাদ চাইছেন। বিমল বলছেন, ‘‘স্ত্রীর জন্য কিছুটা সময় বার করে ভোট প্রচার করছি। নীতির প্রশ্নে দু’জন আলাদা হলেও মানবিকতার বন্ধনে প্রিয়জনেরাই সুখে দুঃখে সবসময়েই পাশে থাকে।।’’

২০১৬ সালে এপ্রিলে পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রতিমা। ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। শুরু হয় লড়াই। তাঁর দাবি, আপাতত কিছুটা সুস্থ রয়েছেন তিনি। কিন্তু এ বার ভোটে তৃণমূলের টিকিট পাননি প্রতিমা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমার কাছের লোকেরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে। কোথাও কোথাও বলে বেড়িয়েছে যে, আমি আর বাঁচব না। তাই ওকে টিকিট দিয়ে কী লাভ হবে!’’ প্রতিমার অভিযোগ, জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূলের অঞ্চাল সভাপতি উদয় সরের বিরুদ্ধে। বহিষ্কৃত পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘উদয়বাবু আমায় টিকিট দিতে অস্বীকার করেন। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে ও আমায় টিকিট দেওয়া হয়নি। আমি তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য হয়েও আমায় কোন সাংগঠনিক মিটিংয়ে ডাকা হয় না।’’

যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই তৃণমূলের জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি স্বীকার করে নিয়েছেন, প্রধান হিসাবে যথেষ্ট ভাল কাজ করেছেন প্রতিমাদেবী। উদয়বাবু বলেন, ‘‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনৈতিক লড়াইয়ে তিনি (প্রতিমা) এখনও ফিট নন। সংগঠনিক ভাবে ওঁর দক্ষতা সে ভাবে নেই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উনি নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর কারণে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’

মানবিকতার বন্ধনে স্ত্রীর হয়ে প্রচারে দেখা যাচ্ছে স্বামীকে। কিন্তু এ-ও তো এক ধরনের ‘দল বিরোধী’ কাজ! উদয়বাবু বলেন, ‘‘বিমলবাবু যে নির্দলের হয়ে প্রচার করছেন, এমন খবর আমাদের কাছে নেই। এমনটা যদি সত্যি হয় তা হলে দল তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE