Advertisement
E-Paper

কাজের দাবিতে বিক্ষোভ বিজেপির, গোলমাল

সংগঠনের শ্রমিকরা কাজ পায়নি, এই দাবিতে খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে কর্মরত শ্রমিকদের বিজেপি-র শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সমর্থকরা কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৬:৫২
বিজেপির বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

সংগঠনের শ্রমিকরা কাজ পায়নি, এই দাবিতে খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে কর্মরত শ্রমিকদের বিজেপি-র শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সমর্থকরা কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় বলে অভিযোগ। কথামতো কাজ বন্ধ না হওয়ায় বুধবার দুপুরে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাধে। কর্মরতদের মধ্যে বিভিন্ন দলের শ্রমিক সংগঠনের সমর্থকরাই ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় ১৬ জন জখম হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝা-সহ কয়েকজনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রেমচাঁদবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পরে তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়।

আইআইটি-র বিভিন্ন ভবন ও হল নির্মাণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার অধীনে বহু শ্রমিক কাজ করেন। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠনের সমর্থকরাই কাজ পান। যদিও কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও মাঝেমধ্যেই ওঠে। শ্রমিক নিয়োগ ঘিরে ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে বলে অভিযোগ। পরে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়, সংগঠনের দু’টি গোষ্ঠীর সমর্থকদেরই আলাদা ভাবে কাজ দেওয়া হবে। একইসঙ্গে আইএনটিইউসি, সিটু, এআইটিইউসি ও ঝাড়খণ্ড দলের শ্রমিক সংগঠনের সমর্থকরাও কাজ পাবে বলে ঠিক হয়।

বছর খানেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে শাখা খুলেছে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। বিজেপির দাবি, শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনৈতিক ভাবে সিপিএম, তৃণমূল, ঝাড়খণ্ড দল মিলে সিন্ডিকেট রাজ চালাচ্ছে। এমনকী তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীকে আলাদা ভাবে কাজ দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের খড়্গপুর আইআইটি নির্মাণ কর্মী শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি অপূর্ব ঘোষের কথায়, “ওঁরা বাদে সব দলের শ্রমিক কাজ করায় সিন্ডিকেট বলা হচ্ছে। পরে ওঁদের শ্রমিকেরা কাজে নিযুক্ত হলে কী হবে? সিন্ডিকেটের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, আইআইটি-র পড়ুয়াদের থাকার জন্য সিস্টার নিবেদিতা হলের ভবন সম্প্রসারণের কাজ করছে গুজরাতের একটি ঠিকাদার সংস্থা। অভিযোগ, এই কাজে বিজেপি বাদে বাকি সব দলের সমর্থক শ্রমিকদেরই কাজ দেওয়া হয়েছে। কাজ দেওয়ার দাবিতে বুধবার প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে যায় মজদুর সঙ্ঘের সমর্থকরা। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা হলের কাজ বন্ধ করার দাবি জানায়। যদিও কাজ বন্ধ না হওয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে আইএনটিটিইউসি, এআইটিইউসি, সিটু-সহ বিভিন্ন দলের সংগঠনের সমর্থকরাই ছিল বলে জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সংঘর্ষে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে চার মহিলা-সহ ৯ জন জখম হয়। ঘটনায় মজদুর সঙ্ঘের ৭ জনও জখম হয় বলে অভিযোগ। আহতদের কয়েকজনকে প্রেমবাজার গ্রামীণ হাসপাতাল ও বাকিদের খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে তৃণমূলের আইআইটি নির্মাণ শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক অসিত পালের অভিযোগ, “বিজেপির বহিরাগতরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে। তা প্রতিহত করতে গিয়েই সংঘর্ষ বেধেছে।’’ একইভাবে, সিটুর আইআইটি নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক শ্যাম ঘোষ, এআইটিইউসির ঠিকাদার মজদুর ইউনিয়নের ইউনিট সম্পাদক আয়ুব আলিদেরও দাবি, “এখানে কোনও সিন্ডিকেট নেই। কয়েকবছর আগে পুলিশ ও আইআইটি কর্তৃপক্ষ বসে সমস্ত রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংখ্যা বেঁধে দিয়েছিলেন। তখন সেখানে বিজেপির কেউ ছিলেন না।’’

যদিও বিজেপির অভিযোগ, আইআইটি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগে তৃণমূল, সিপিআই, সিপিএম-সহ অন্য দলগুলি একচেটিয়া রাজত্ব চালাচ্ছে। অথচ বিজেপির শ্রমিকেরাই কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের জেলা কার্যকরী সম্পাদক পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘এ দিন আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলাম। ওঁরা আমাদের ওপর চড়াও হওয়ায় মহিলা-সহ অনেকে জখম হয়েছেন। আমরা প্রতিহত করেছি।” এ বিষয়ে আইআইটির রেজিস্ট্রার প্রদীপ পাইন বলেন, “একটা সমস্যা হয়েছিল। এখন সব স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। কী হয়েছে বলতে পারব না। তবে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।”

BJP agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy