Advertisement
E-Paper

সুভাষ-সফর মনে রেখে রক্তদান

সুভাষচন্দ্রের ঝাড়গ্রামে পদার্পণের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি স্মরণীয় করে রাখার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

দুর্গা ময়দানের অনুষ্ঠান স্থল। বুধবার।

দুর্গা ময়দানের অনুষ্ঠান স্থল। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ০৫:২৫
Share
Save

সালটা ১৯৪০। তখনও সুভাষচন্দ্র বসু ‘নেতাজি’ হননি। ওই বছরের ১২ মে ঝাড়গ্রামে এক জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। নাড়াজোলের কুমার দেবেন্দ্রলাল খানের আয়োজনে অবিভক্ত মেদিনীপুরে সেটিই ছিল সুভাষচন্দ্রের শেষ জনসভা। ওই সভায় সুভাষচন্দ্র ঘোষণা করেছিলেন, ‘আপস নয়, সংগ্রাম ও ত্যাগের পথেই স্বরাজ আসবে’। তারপর ৮১ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবে এই দিনটিকে উদ্‌যাপনের কোনও সরকারি উদ্যোগ সেভাবে চোখে পড়েনি। এ বারও একই ছবি। তবে স্মরণ হল। প্রতিবারের মতোই তা করল স্থানীয় দুর্গা ময়দান ক্লাব।

বুধবার ওই বিশেষ দিনে নেতাজিকে স্মরণ করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল ওই ক্লাব। ১৯৪০ সালের ১২ মে নেতাজি যেখানে সভা করেছিলেন সেই দুর্গা ময়দান চত্বরে রয়েছে ওই ক্লাবটি। তাদের উদ্যোগে বহু বছর ধরেই দিনটি উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। তবে রক্তদান শিবির হচ্ছে পাঁচ বছর ধরে। এ দিন রক্তদান শিবিরের আগে নেতাজি স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় পতাকা তোলেন বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। ছিলেন ঝাড়গ্রাম পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন প্রশান্ত রায়, প্রবীণ সমাজসেবী বিষ্ণুপদ রায় প্রমুখ।

সুভাষচন্দ্র ঝাড়গ্রামে সভা করতে এসে স্থানীয় কয়েকটি জায়গাতেও গিয়েছিলেন। অথচ সুভাষচন্দ্রের ঝাড়গ্রামে পদার্পণের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি স্মরণীয় করে রাখার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে আক্ষেপ ছিল প্রয়াত নেতাজি-গবেষক তারাপদ করের। বর্তমান দুর্গা ময়দানটির সাবেক নাম ছিল লালগড় মাঠ। ওই সময়ে লালগড় রাজ পরিবারের অধীনে ছিল ওই মাঠ। তারাপদ করের লেখা ‘সুভাষচন্দ্রের ঝাড়গ্রাম সফর’ বই থেকে জানা যায়, সে দিন সকালে মেদিনীপুর থেকে গাড়িতে ধেড়ুয়া হয়ে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র। ঝাড়গ্রাম আসার পথে দহিজুড়িতে বিশাল তোরণ বানিয়ে সুভাষচন্দ্রকে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। ঝাড়গ্রামে এসে ব্যবসায়ী নলিনবিহারী মল্লিকের আতিথ্য গ্রহণ করে একটি টালির বাড়িতে (এটি এখন উড়ালপুলের কাছে বাছুরডোবা পেট্রোল পাম্পের অফিস ঘর) কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েছিলেন। যদিও সেই সাবেক লাল টালির উপর এখন নীল রঙের প্রলেপ পড়েছে। সে দিন ঝাড়গ্রাম আদালতে বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকও করেছিলেন সুভাষচন্দ্র। বিকেল সাড়ে চারটায় সভাস্থলে পৌঁছেছিলেন। পরণে ছিল ধুতি-পাঞ্জাবি। মাথায় গাঁধী টুপি। তিনি মাঠে পৌঁছতেই আতসবাজি পুড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। সভা সেরে পরদিন ভোরে ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে হাওড়ার ট্রেন ধরেছিলেন সুভাষচন্দ্র।

দুর্গা ময়দান ক্লাবের কর্মকর্তা সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়, তন্ময় সিংহ বলেন, ‘‘নেতাজির ঝাড়গ্রাম সফরের ৮২ তম বর্ষে পা দিলাম আমরা। প্রতি বছর সাধ্যমতো দিনটি স্মরণ করি। নতুন প্রজন্মের মধ্যে নেতাজির আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য গত পাঁচ বছর ধরে রক্তদান শিবিরের আয়োজনও হচ্ছে।’’ দুর্গা ময়দানে সুভাষচন্দ্রের একটি পূর্ণাবয়ব শ্বেতমর্মর মূর্তি বসানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানালেন তাঁরা।

Blood Donation Netaji Subhash Chandra Bose

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}