উৎসবের মরসুমেও আসন্ন বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে জনসংযোগে অতিরিক্ত জোর দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলি। পুজো চলাকালীন সময়ে তো বটেই, পুজো মিটে যাওয়ার পর এ বার বিজয়াকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পন্থায় রাজনৈতিক জনসংযোগ শুরু করেছে তারা। বিজয়া সম্মিলনীর আবহে দলের সব স্তরের জনপ্রতিনিধি এবং কর্মীদের সঙ্গে জনসংযোগ শুরু করেছে কমবেশি সব রাজনৈতিক দল।
দুর্গাপুজোয় এ বার প্রথম প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিল তাঁর কন্যা আজানিয়াও। পুজোয় অভিষেকের এ হেন প্যান্ডেল ভ্রমণকে অনেকেই ‘জনসংযোগের মঞ্চ’ হিসাবে বর্ণনা করছেন। আবার পুজো মিটতে না মিটতে সেই অভিষেকের নির্দেশেই পশ্চিমবঙ্গের ব্লকে ব্লকে বিজয়া সম্মিলনীর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল।
পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে কাঁথি এবং তাম্রলিপ্ত সাংগঠনিক জেলায় বড় মাপের বিজয়া সম্মিলনীর প্রস্তুতি শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। আগামী ১২ অক্টোবর তাম্রলিপ্ত সাংগঠনিক জেলায় দলের বিজয়া সম্মিলনীর হবে। ১৩ অক্টোবর কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজয়ার অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।
তৃণমূলের তাম্রলিপ্ত সাংগঠনিক জেলায় আগামী ৯ অক্টোবর থেকে প্রতিটি ব্লক এবং শহরে বিজয়া সম্মিলনী করবে তৃণমূল। তা চলবে আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপর জেলা পর্যায়ে আগামী ১৮ অক্টোবর তমলুকে বিজয়া সম্মিলনী হবে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ব্লক এবং শহরগুলির বিজয়া সম্মিলনী। ১৮ অক্টোবর জেলা স্তরের সম্মেলন হবে কাঁথিতে। কোন ব্লকে কবে তা হবে, সংশ্লিষ্ট সভাপতিদের জেলা নেতৃত্বের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা এলাকায় অনুষ্ঠানের তারিখ ও জায়গা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পীযূষ কান্তি পন্ডা বলেন,"দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে সমস্ত ব্লক এবং শহরের সভাপতিদের বিজয় সম্মেলনের দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুই-একটি জায়গায় স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সূচি চূড়ান্ত করা হবে।"
আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। গতবার ২০০ আসনে জয় লাভের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও ৭৭ এ আটকে গিয়েছিল বিজেপি। এ বার তারা অনেক আগে থেকেই কোমর বেঁধে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছে। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার জন্য পর্যবেক্ষক হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এবং তাঁর সহকারী ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ইতিমধ্যে এসে পড়েছেন কলকাতায়। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুরে দলের নেতা ও কর্মীদের ভোটের প্রস্তুতিতে নামানোর আগে বিজয়ার জনসংযোগের আয়োজন করছে গেরুয়া শিবিরও।
বিজেপির তাম্রলিপ্ত সংগঠনিক জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারী বলেন,"রাজ্য নেতৃত্বের তরফে বিজয়া সম্মিলনীর সূচি জানানো হয়েছে। সেই মাফিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।"
তবে তৃণমূল এবং বিজেপির উল্টো পথে রয়েছে বামেরা। তারা বিজয়া সম্মিলনী করবে না । সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাস বলেন,"পার্টির নিয়ম মেনে অক্টোবর এবং নভেম্বরে অনেক কর্মসূচি হয়েছে। তার মাধ্যমে আমাদের জনসংযোগ চলবে।’’ সংগঠন ততটা শক্তিশালী না হওয়ায় ঘরোয়া ভাবে বিজয়া সম্মিলনীর পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। কাঁথি মহকুমা কংগ্রেস সভাপতি গঙ্গারাম মিশ্র বলেন,"অন্যদের মতো জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও আমরা নিজেরা মিলিত হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করব।"
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)