Advertisement
E-Paper

নকল আটকাতে সিসিটিভি

কেউ তরতরিয়ে পাইপ বেয়ে উঠে গিয়েছে স্কুলের দোতলার জানালায়। আবার কেউ গাছের ডালে কাগজ বেঁধেই পৌঁছে দিচ্ছেন বন্ধুর কাছে। মাধ্যমিক হোক বা উচ্চ মাধ্যমিক- যে কোনও পরীক্ষায় নকলে সাহায্য করার অভিযোগ নতুন নয়। নকল করা রোধে এ বার তাই ক্লাসে ক্লাসে সিসিটিভির ব্যবস্থা করল গড়বেতা-২ ব্লকে হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুল। চন্দ্রকোনার পোঁয়াই হাইস্কুলেও সিসিটিভির বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০১:৫৬
হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি। শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।

হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি। শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।

কেউ তরতরিয়ে পাইপ বেয়ে উঠে গিয়েছে স্কুলের দোতলার জানালায়। আবার কেউ গাছের ডালে কাগজ বেঁধেই পৌঁছে দিচ্ছেন বন্ধুর কাছে। মাধ্যমিক হোক বা উচ্চ মাধ্যমিক- যে কোনও পরীক্ষায় নকলে সাহায্য করার অভিযোগ নতুন নয়। নকল করা রোধে এ বার তাই ক্লাসে ক্লাসে সিসিটিভির ব্যবস্থা করল গড়বেতা-২ ব্লকে হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুল। চন্দ্রকোনার পোঁয়াই হাইস্কুলেও সিসিটিভির বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে প্রতি জেলাতেই কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সে ক্ষেত্রে সংসদ প্রস্তাব দেয়, কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভির বন্দোবস্ত করলে ভাল হয়। এর আগেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসিটিভি বসানোর নজির রয়েছে। যদিওএই প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্রান্ত ‘ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইসরি কমিটি’-র এক সদস্য মধুসূদন গাঁতাইত বলেছেন, “কয়েক বছর আগে পর্যন্ত জেলায় মাওবাদী সমস্যার জন্য বহু কেন্দ্র সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত করা হত। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ায় ২০১৩ সাল থেকে জেলার কোনও কেন্দ্রকে আর সংবেদনশীল হিসেবে চিহ্নিত করা হয় না।” তিনি বলেন, “জেলার দু’একটি স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভি লাগানো হয় শুনেছি। এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।” হুমগড় চাঁদাবিলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তি ষন্নিগ্রাহী বলেন, “পরীক্ষায় নকল রোখার পাশাপাশি শিক্ষকেরাও সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন কিনা, সেটাও সিসিটিভি-র মাধ্যমে দেখা যাবে। নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভি বসানো হলেও এটি সব সময় থাকবে। এতে ভবিষ্যতে নিয়মিত ক্লাসের উপরও নজর রাখা যাবে।”

স্কুল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। স্থানীয় বাসিন্দা রাজশেখর পণ্ডার কথায়, “ এই স্কুলের উন্নয়নে আমরা গ্রামের মানুষও সব সময় স্কুলের সঙ্গেই রয়েছি। এই ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এ ভাবেই আমাদের স্কুলের আরও সুনাম হোক, এটাই আমরা চাই।” কাউন্সিল নিযুক্ত সেন্টার ইনচার্জ সুভাষ চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “বন্ধুকে নকল করায় সাহায্যের ব্যাপারে উৎসাহীদের সংখ্যা যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা সত্যিই দুশ্চিন্তার। তাই এই স্কুলে সিসিটিভি-র ব্যবস্থা করা হচ্ছে শুনে আমরাও স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু পরীক্ষা নয়, সারা বছরই বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি চালাতে সিসিটিভি কাজে লাগবে। স্কুলের পড়ুয়ারা যত্রতত্র ময়লা ফেলছেন কিনা, শিক্ষকেরা সঠিক সময়ে ক্লাসে যাচ্ছেন কিনা, ঠিক মতো পড়াচ্ছেন কিনা, শিক্ষক ক্লাস নেওয়ার সময় ছাত্রছাত্রীরা অভব্য আচরণ করছে কিনা, টিফিনে খেলার সময় কেউ ক্লাসে ঢুকে অন্যের ব্যাগ থেকে পেন বা পেন্সিল বক্স বের করে নিচ্ছে কিনা, কোনও ছাত্র ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন কিনা - সব কিছুর নজরদারি চলবে ক্যামেরার মাধ্যমে। স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, এক জন ছাত্র বা ছাত্রী দিনের বেশিরভাগ সময়টা স্কুলে কাটায়। কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে থাকলে ভবিষ্যতেও তাঁদের জীবনে শৃঙ্খলাবোধ তৈরি হবে। তা জোরদার করতেই যতটা সম্ভব ত্রুটিমুক্ত করার উদ্যোগ।

স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুনীলবরণ পণ্ডার কথায়, “প্রত্যন্ত এলাকায় যে স্কুল কঠোর শৃঙ্খলায় চালানো যায়, স্কুলের ফল ভাল করা যায় সে জন্য শিক্ষকেরা চেষ্টা করছেন। এটাই আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি।”

পরীক্ষকেন্দ্রে নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভি বসানো হয়েছে চন্দ্রকোনার পোঁয়াই হাইস্কুলেও। প্রধান শিক্ষক সূর্যকান্ত গিরির কথায়, “নজরদারি বাড়াতে স্কুলে সিসিটিভি বসানো হয়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ প্রতিনিধি দলও বিষয়টির প্রশংসা করেছে।”

higher secondary cctv garbeta suman ghosh HS Examination
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy