Advertisement
E-Paper

খেলার ছলে আস্ত চাবি গিলে ফেলেছিল খুদে! পাঁচ দিন পর বেরোল মলের সঙ্গে, স্বস্তিতে খড়্গপুরের পরিবার

চন্দন জানিয়েছেন, শুক্রবার গভীর রাতে মলের সঙ্গে নিজে থেকেই বেরিয়ে আসে সেই চাবি। হাঁপ ছেড়ে বাঁচে পরিবার। আনন্দে কেঁদেই ফেলেন বাড়ির সকলে। তবে খুদে ‘বীরপুরুষ’ তখনও খোশমেজাজেই! চেঁচিয়ে বলে ওঠে, ‘বলেছিলাম না, ভয় কোরো না?’

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৪৫
বাবা-মায়ের সঙ্গে খুদে অনীক।

বাবা-মায়ের সঙ্গে খুদে অনীক। — নিজস্ব চিত্র।

খেলার ছলে আস্ত চাবি গিলে ফেলেছিল ছোট্ট ছেলে অনীক দাস অধিকারী। সেই থেকে প্রায় ৪-৫ সেন্টিমিটারের লোহার চাবি পেটের মধ্যেই আটকে ছিল তার। টানা পাঁচ দিন ধরে কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলে গিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের দাস অধিকারী পরিবার। কখনও কলকাতা, কখনও চেন্নাইয়ের বড় বড় হাসপাতালে যোগাযোগ করে চলেছিলেন উদ্বিগ্ন পরিজনেরা। সাহসী অনীক অবশ্য ছিল বহাল তবিয়তেই! বাবা-মাকে অভয় দিয়ে বলছিল, চাবি আজই বেরিয়ে যাবে মলের সঙ্গে। সেই কথাই সত্যি হল। পাঁচ দিন পর শেষমেশ মলের সঙ্গে আপনাআপনিই বেরিয়ে গেল সেই চাবি।

অনীকের বাবা চন্দন দাস অধিকারী হরিনা হাইস্কুলের শিক্ষক। গত পাঁচ দিন ধরে চরম উদ্বেগে দিন কেটেছে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সানঝরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই পরিবারের সকলের। অনীকের বাবার কথায়, ‘‘গত রবিবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ছেলে-মেয়েকে নিয়ে শুয়েছিলাম। স্ত্রী তখনও রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। সে সময় হঠাৎ চাবি গিলে ফেলে ছেলে।’’ চন্দন জানান, বাবার কাছ থেকে শুয়ে শুয়ে গল্প শোনার ফাঁকে হঠাৎ পকেট থেকে চাবিটি বের করে সোজা মুখের ভিতর চালান করে দেয় ছোট্ট অনীক। পরমুহূর্তেই সেই চাবি তার গলায় আটকে যায়। গভীর রাতে হুলস্থুল পড়ে যায় বাড়িতে। চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন পাড়াপড়শিরাও। প্রথমে ছেলের গলায় আঙুল ঢুকিয়ে চাবিটি বের করার চেষ্টা করেন চন্দন। কিন্তু উল্টে আঙুলের চাপে চাবি গলা থেকে চলে যায় ভিতরে। আর দেরি না করে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ গাড়ি ডেকে ছেলেকে নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে রওনা দেয় ওই পরিবার। এক্স-রে করে জানা যায়, চাবি আর গলায় নেই, তত ক্ষণে তা পৌঁছে গিয়েছে পাকস্থলীতে!

সোম ও মঙ্গলবার শিশুটিকে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগে পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু দু’দিনে এতটুকুও স্থান পরিবর্তন হয়নি চাবির। তবে এত কিছুর পরেও অনীক সুস্থই ছিল। এর পরেই চিকিৎসকেরা জানান, চিন্তার কিছু নেই। কিছু দিন অপেক্ষা করলে মলের সঙ্গে আপনাআপনিই বেরিয়ে যাবে চাবি। কিন্তু দিন কয়েক পরেও চাবিটি না বেরোলে অস্ত্রোপচার করতে হবে। বুধবার সকাল পর্যন্ত চাবিটি না বেরোনোয় অনীককে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা। সেখানেও অবশ্য চিকিৎসকেরা একই কথা বলেন। শেষমেশ বুধবার রাতে ছেলেকে নিয়ে ফের বাড়ি ফিরে আসে অনীকের পরিবার।

চন্দন জানিয়েছেন, শুক্রবার গভীর রাতে মলের সঙ্গে নিজে থেকেই বেরিয়ে আসে সেই চাবি। হাঁপ ছেড়ে বাঁচে পরিবার। আনন্দে কেঁদেই ফেলেন বাড়ির সকলে। তবে খুদে ‘বীরপুরুষ’ তখনও খোশমেজাজেই! চেঁচিয়ে বলে ওঠে, ‘বলেছিলাম না, ভয় কোরো না?’

Kharagpur child key
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy