—প্রতীকী চিত্র।
কয়েক বছর ধরেই তৃণমূলে নবীন ও প্রবীণের টানাপড়েন ছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর দল ও সরকাারে নবীনদের প্রভাব বাড়ে। তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে আদি-নব্য লড়াই তীব্র হয়।
শুক্রবার কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধিবেশনের পর তা আরও প্রকট ভাবে সামনে এসেছে বলে জেলা তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন। খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলাতেও শাসক দলে 'আদি' বনাম 'নব্যের' লড়াাই প্রবল। এর জন্য লোকসভা ভোটে দলকে বড় খেসারৎ দিতে হতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করেছেন।
নেতাজি ইন্ডোর স্টোডিয়ামের সভায় তৃণমূল নেত্রী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, প্রবীণদের সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে। আবার দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সরাসরি দলের এই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি দলে অভিষেক-ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত।পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের নব্যরা যত সক্রিয় হয়েছে, ততই নিষ্ক্রিয় হয়েছেন আদি নেতারা।কাঁথি থেকে নন্দীগ্রাম—সর্বত্র দলে এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নব্য দের গুরুত্ব বেড়েছে। যা নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে প্রবীণ দের মধ্যে। ২১ এর বিধানসভা ভোট এবং তার পরবর্তী সময়ে পুরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে বারবার সামনে এসেছে আদি এবং নব্য শিবিরের সংঘাত। সম্প্রতি, দু’টি সংগঠনিক জেলার রদ বদলের পর দলের অন্দরে সেই সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় বিধায়ক তরুণ মাইতিকে সরিয়ে সভাপতি করা হয়েছে পীযূষ পণ্ডাকে। তিনি পটাশপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। চেয়ারম্যান হয়েছেন এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি। এরা দু’জন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
মন্ত্রী অখিল গিরি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো সৈনিক। কিন্তু তার তুলনায় জেলায় কংগ্রেস ছেড়ে দলে যোগ দেওয়া উত্তমের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হওয়ার দৌড়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত শিকে ছেড়েনি অখিল শিবিরের দুই দাবিদারের। শনিবার বিকেলেই আদি এবং নব্যগোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয় তৈরি করতে বিশেষ বৈঠক করেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষ পণ্ডা। তিনি বলছেন, "আমি শুধুমাত্র মঞ্চ তৈরি করার লোক। পুরনোরাই হচ্ছেন মঞ্চের আসল নেতা। তাঁদের বলছি, আপনারা মঞ্চে এসে বসুন।’’একই রকম ভাবে নন্দীগ্রামে সুফিয়ান- পীযুষ দ্বন্দ্ব রয়েছে। পীযূষ ভূঁইয়াকে তমলুক সংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর নন্দীগ্রামের দাপুটে তৃণমূল নেতা সুফিয়ান বলেছিলেন,"দেরিতে হলেও দল বুঝতে পেরেছে।" তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন,‘‘নতুন দের লম্ফঝম্প নজরে আসেনি। দেখতে পেলেই তাঁদের বলব পদ নাও, দায়িত্ব সামলাও। তবে দেখে নিতে হবে তাঁরা কোথাও হোঁচট খাচ্ছে কিনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy