Advertisement
২৩ মে ২০২৪
Corona

করোনা আক্রান্তের ঝুলন্ত দেহ মিলল বাড়িতেই

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চিন্ময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল আদালতে করণিক পদে কাজ করতেন।

করোনা বিধি মেনে পিপি পরে দেহ নিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

করোনা বিধি মেনে পিপি পরে দেহ নিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ আসার পরে হোম আইসোলেশনে ছিলেন শুক্রবার থেকে। রবিবার সকালে বাড়ির বারান্দায় উদ্ধার হল করোনা আক্রাম্তের ঝুলন্ত দেহ।

তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর গ্রামের চিন্ময় গুছাইতের (৪৬) এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোরগোল পড়ে। পরিবারের তরফে খবর দেওয়া হলে উপযুক্ত করোনা সুরক্ষা বিধি মেনে পুলিশ ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চিন্ময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল আদালতে করণিক পদে কাজ করতেন। সেখানে তিনি বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। মাঝেমধ্যে মোটর সাইকেলে বাড়ি থেকেও যাতায়াত করতেন। স্ত্রী, ১০ বছরের মেয়ে, দু’মাসের শিশু পুত্র, বাবা-মা এবং ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন। করোনা আবহের মধ্যে তিনি আদালতে কাজে যাচ্ছিলেন। কয়েকদিন ধরে হালকা জ্বর থাকায় গত বৃহস্পতিবার চিন্ময় ঘাটাল থেকে তমলুকের বাড়িতে ফিরে আসেন। তাঁর ভাই মৃণ্ময় বলেন,’’হাল্কা জ্বর থাকায় দাদা করোনা পরীক্ষার জন্য শুক্রবার সকালে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন। সেখানে র‍্যাপিড আন্টিজেন টেস্টে পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছিল। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জানতে চাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য দাদা হাসপাতালে ভর্তি হবেন, না বাড়িতে হোম আইসোলেশনে থাকবেন। দাদা বাড়িতেই থাকতে চেয়েছিলেন। সেইমত হোম আইসোলেশনে ছিলেন।’’

মৃণ্ময় জানান, বাড়ির দোতলায় একটি ঘরে দাদার আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বৌদি, ভাইঝি ও ভাইপোকে নিয়ে কয়েক দিন আগে বাপের বাড়িতে চলে যান। পরিবারের অন্যরা বাড়ির একতলায় থাকছিল। দাদাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিল। শনিবার রাত ১০ টা নাগাদ দাদাকে রাতের খাবার দেওয়া হয়েছিল। এরপরে গরম জল দেওয়া হয়। রাত ১১ টা নাগাদ দাদা ঘুমোতে চলে যান। এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায় বারান্দার কড়ি কাঠে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগানো ঝুলছে দাদার দেহ।

মৃণ্ময়ের দাবি, ‘‘করোনার পরীক্ষায় রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরে দাদা মানসিক দিক থেকে কিছুটা ভেঙে পড়েছিলেন। তবে আমরা সবাই ওকে সাহস জোগাতাম। তা সত্ত্বেও এমন ঘটনা ঘটল। আমাদের অনুমান, মানসিক অবসাদে দাদা আত্মহত্যা করেছেন।’’

শহিদ মাতঙ্গিনীর বিডিও অমিতকুমার গায়েন বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি করোনা পজ়িটিভ হওয়ায় ‘হোম আইসোলেশনে’ ছিলেন। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। নিয়ম মেনে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে কোভিড বিধি অনুযায়ী দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে।’’

তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে । মৃতদেহের ময়না তদন্ত করা হচ্ছে । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE