নিভৃতবাস কেন্দ্রের (কোয়রান্টিন সেন্টার) দিনযাপন সেরে ফের বাড়ির হেঁশেল সামলাচ্ছেন করোনা যুদ্ধে জয়ী মহিলা। মনের যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে ফের পুরনো ছন্দে ফিরছে এগরার মাইতি পরিবার। মনের জোর থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়, জানাচ্ছেন করোনা-জয়ী আত্মবিশ্বাসী বছর সাতান্নর গৃহিণী।
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে করোনা আক্রান্ত এক আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন। এরপর মাইতি পরিবারের সকলকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছিল। গত ২৮ মার্চ ওই মহিলার শরীরে করোনার উপস্থিত ধরা পড়ে। করোনা সংক্রমণের কথা শুনে তিনি ভেবেছিলেন, সবকিছু বোধহয় শেষ হয়ে গেল! নানা দুশ্চিন্তা ভিড় করেছিল মনে। পরদিন চিকিৎসার জন্য কলকাতা নিয়ে যাওয়ার সময়, ফের বাড়ি ফিরার কথা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি।
শরীরে মারণ ভাইরাস বাসা বাঁধলেও, মনোবল হারিয়ে ফেলেননি তিনি। কলকাতার হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরে, চিকিৎসকদের নির্দেশে ১৪ দিন নিভৃতবাসে ছিলেন তিনি। নিভৃতবাস কাটিয়েছিলেন বাড়ির একটি ঘরে। এরপর গত ২১ এপ্রিল নিভৃতবাস কাটিয়ে সকালে প্রথম বাড়ির ঠাকুর ঘরে গিয়েছিলেন মহিলা। ছেলেমেয়েদের উৎসাহে আপাতত নতুন করে হেঁশেল সামলাচ্ছেন করোনা জয়ী। মাইতি পরিবারের দুপুরের খাবারে ছোলা ও ডালবাটার, ধোকা থেকে তরকারি— সবই নিজে হাতে বানাচ্ছেন তিনি। সন্ধ্যার জলখাবারে পকোড়া, বেগুনি সবকিছু নিজে হাতে সাজিয়ে দিচ্ছেন ঠিক আগের মতো।
গৃহকর্ত্রীর কথায়, ‘‘যুদ্ধে কখনও নিজেকে হেরে যেতে দিইনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘করোনা হলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করে। এটা একটা সংক্রমণ, চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। অন্যদের বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য আমার প্লাজমা যদি প্রয়োজন হয়, আমি তা দিতে রাজি রয়েছি।’’