ক্রমশ কমছে দৈনিক করোনা সংক্রমণ। এ বার দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা একশোরও নীচে নেমে গেল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে পশ্চিম মেদিনীপুরও। এক সময়ে দৈনিক সংক্রমণ ছ’শো ছুঁইছুঁই হয়ে গিয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যাটা একশোর নীচে নামতে প্রায় দু’মাস সময় লাগল।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘জেলায় করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। সংক্রমণের হার অনেক কমেছে।’’ জেলাশাসক জুড়ছেন, ‘‘কিন্তু আত্মসন্তুষ্টির কোনও জায়গা নেই। সতর্ক এবং সচেতন থাকতে হবে।’’ দ্বিতীয় ঢেউয়ের শক্তি কমছে। এর মধ্যেই তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার জেলাস্তরে এক বৈঠকও হয়েছে। মেদিনীপুরে জেলা কালেক্টরেটের সভাঘরে বৈঠকটি হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক। ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতর, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আধিকারিকেরাও। ওই বৈঠকে
জেলার করোনা পরিস্থিতিরও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের এক সময়ে জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল! অর্থাৎ, প্রতি একশোজনে ৩০ জনেরও বেশি সংক্রমিত হচ্ছিলেন। এখন সেই হার ১০ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় হার ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। আরটিপিসিআর পরীক্ষায় হার খানিক বেশি রয়েছে। রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীও বলেন, ‘‘দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা অনেকই কমেছে। সংক্রমণের হারও কমেছে। এটা স্বস্তিরই।’’ জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে। করোনায় রাশ টানতে হলে সতর্ক এবং সচেতন থাকতেই হবে। তা না- করে এখন যদি করোনা কমেছে বলে ফের নিয়ম ভাঙা শুরু হয়, তাহলে আবার সমূহ বিপদ দেখা দেবে। নতুন করে সংক্রমণ ছড়াতে বেশি সময় লাগবে না।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে সবমিলিয়ে ৮৬ জন করোনা সংক্রমিতের হদিস মিলেছে। বুধবার ৯৩ জন সংক্রমিতের হদিস মিলেছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের চোখ রাঙানির পর বুধবারই প্রথম দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা একশোর নীচে নামে। মঙ্গলবার ১১১ জন সংক্রমিতের হদিস মিলেছিল। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় সংক্রমণের হারও ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। বুধবার জেলায় ১,৩১৬ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে ৪০ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ১,২৭৬ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। দেখা যায়, রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও ১৬ জনের মধ্যে করোনার উপসর্গ ছিল। এঁদের নমুনা ফের আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কারণ, করোনার নিশ্চিত পরীক্ষার আরটিপিসিআর-ই। করোনা পরীক্ষার সংখ্যা, সংক্রমিতের সংখ্যা, সংক্রমণের হার, গত কয়েক দিনের এ সব তথ্য খতিয়ে দেখে জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা নিশ্চিত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে এ জেলায়ও।